আগামী বছর থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইন্টারনেটের আওতায় আসবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে নানা অভিযোগ তুলছেন অভিভাবকরা। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা বিমুখ হয়ে পরছেন। এছাড়াও নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের কারণে শিক্ষা ব্যয়
বেড়েছে। পরীক্ষাবিহীন শিক্ষাব্যবস্থা হওয়ায় শিক্ষার্থীরাও মোবাইল নির্ভর হয়েছে। তা নিয়ে অনেক অভিভাবক চিন্তিত। এমন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে নতুন জাতীয় শিক্ষাক্রম নিয়ে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
সভায় নতুন শিক্ষাক্রমের বিষয়ে দেশের বিভিন্ন স্তরের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ যোগ দেন।
সভায় শিক্ষাবিদ ও আইইআর’র চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম বলেন, নতুন কারিকুলামের মাধ্যমে একটি পরিবর্তনের যাত্রায় আমরা রয়েছি। পরিবর্তনের যাত্রা তো আমাদেরকেই শুরু করতে হবে। এই কারিকুলাম বাস্তবায়নে শিক্ষকদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকরা বলেন, আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে বিভক্তির অন্যতম কারণ ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা। এ সময় অভিন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করার সুপারিশ করা হয়। এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, নতুন শিক্ষাক্রমের বাইরে শুধুমাত্র কওমি মাদ্রাসা রয়েছে। আমাদের কারিকুলামের সঙ্গে
তাদের সম্পৃক্ত করার একটি প্রয়াস চলছে। তবে এর বাইরে কারিগরি, মাদ্রাসা ও স্কুলগুলোতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় আগে ছিল জ্ঞান অর্জনের জায়গা। এখন তা বদলে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা অর্জনের প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এ সময় বক্তারা নির্বাচনকে সামনে রেখে ব্লেন্ডেড এডুকেশন
ও শিক্ষকদের স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে জানতে চান। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, স্বতন্ত্র বেতন কাঠামোর বিষয়ে আমরা এখনো এগুতো পারিনি। এ বিষয়টা নিয়ে কাজ করার অনেক জায়গা আছে।
অনেকের অভিযোগ রয়েছে নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নের আগে অংশীজনদের সঙ্গে তেমন আলোচনা হয়নি। অনেক মন্ত্রিসভার সদস্য এ বিষয়ে মতামত দিতে পারেননি বলেও জানা গেছে। এ প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সাল থেকে দীর্ঘ সময় ধরে নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে কাজ করা হয়েছে।
এই সময়ে ৬টি গবেষণা হয়েছে। ১০২টি দেশের শিক্ষাক্রম পর্যালোচনা করা হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কীত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যদের সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই কারিকুলাম পরিমার্জনে বেশকিছু সংযোজন-বিয়োজন করে অনুমোদন দিয়েছেন। নতুন শিক্ষাক্রম
শিক্ষার্থীদেরকে অনুসন্ধিৎসু ও কৌতূহলী করে তুলবে। যা সমৃদ্ধির বাংলাদেশ গড়তে অবদান রাখবে।
নতুন শিক্ষাক্রম নিয়ে এই মতবিনিময় সভার সভাপতিত্ব করেন- এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল ছাড়াও সংসদ সদস্য, রাজনৈতিক নেতা, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ,
গণমাধ্যমকর্মী, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, পরিচালকগণ।