বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৫৮ অপরাহ্ন

করোনা ঠেকাতে ব্যাংক নোটকে ভাইরাস মুক্ত করছে বেশ কয়েকটি দেশ

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৬ এপ্রিল, ২০২০

ভাইরাস ছড়ানোর বেশ কয়েকটি মাধ্যমের মধ্যে অন্যতম হলো ব্যাংক নোট এবং কয়েন। এটি উপলদ্ধির পর চীন, থাইল্যান্ড এবং তুরস্কসহ আরো কয়েকটি দেশ ব্যাংক নোটের ব্যাপারে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দিয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকেও বার বার ডিজিটাল ব্যাংকিং-এর উপর জোড় দিতে বলা হচ্ছে। ইতিমধ্যে নোটকে ভাইরাস মুক্ত করতে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এখন সময় এসেছে টাকার ব্যবহার নিয়ে আমাদের সচেতন হবার।

এক নজর দেখে নেয়া যাক ব্যাংক নোটকে ভাইরাস মুক্ত করতে কয়েকটি দেশ যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

থাইল্যান্ড :
করোনা ভাইরাস বা কোভিড-১৯-এর সংক্রামণ রোধ করতে এবার অভিনব পদ্ধতি গ্রহণ করেছে ব্যাংক অব থাইল্যান্ড। ৬ এপ্রিল সোমবার থাইল্যান্ডের কেন্দ্রী ব্যাংক ঘোষণা করেছে করোনা ভাইরাসের সংক্রামণ রোধে ব্যাংক নোট অর্থাৎ থাই বাথ এবং কয়েন সাবান পানির দ্রবণ্যে কিংবা ডিশ ওয়াশিং তরলে ধুয়ে ফেলতে হবে। যেন নোটগুলোর মাধ্যমে ভাইরাস না ছাড়ায়।
ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের ঘোষণায় আরো বলা হয়েছে, ধুয়ে নেয়ার পর নোটগুলোকে ভালো করে শুকাতে হবে। সে ক্ষেত্রে নোটগুলোকে রোদে রাখা যেতে পারে। আরো বলা হয়েছে, নোটগুলো কোনোভাবেই ওয়াশিং পাউডার বা ব্লিচিং পাউডারের মিশ্রণে ধৌত করা যাবে না। এতে এগুলো খুব সহজেই নষ্ট হয়ে যাবে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হবে।
ব্যাংক অব থাইল্যান্ড বলেছে, করোনা ভাইরাসের এই ক্রান্তিকালে যতটা সম্ভব নোটের ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে। ডিজিটাল ব্যাংকিং-এর মাধ্যমে লেনদেন করাই সবচেয়ে নিরাপদ।
এদিকে ব্যাংক অব থাইল্যান্ডের এমন ঘোষণার সাথে সাথেই এই ব্যবস্থার প্রচলণ শুরু করেছে থাইল্যান্ডের সাধারণ মানুষ। থাইল্যান্ডে বসবাস করা মানুষেরা ইতিমধ্যেই খুবই যত্ন সহকারে ব্যাংক নোট এবং কয়েন ধুয়ে নিচ্ছে যেন এই নোট বা কয়েন থেকে অন্য কেউ করোনা ভাইরাসে সংক্রামিত না হয়।
থাইল্যান্ড প্রবাসী নাজির সরকার বলেন, নোট বা কয়েন ভাইরাস ছড়ানোর একটি অন্যতম মাধ্যম। আমরা ইতিমধ্যে চীনের উহানে দেখেছি চীন সরকার উহানে ব্যবহৃত নোটগুলো সংগ্রহ করেছে। আর থাই সরকার এই নোটগুলোকে ধুয়ে শুকিয়ে আবার আদান প্রদানের নির্দেশ দিয়েছে। সুতরাং আমার মনে হয় বাংলাদেশ সরকারেরও এ ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।

আমেরিকা :
মার্কিন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কাগজের নোটে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস থাকতে পারে এবং তা এক হাত থেকে আরেক হাতে যাওয়ার পর এক জনের থেকে আরেক জনকে সংক্রামিত করতে পারে। ফেডারেল রিজার্ভের তথ্যানুসারে একটি নোট সর্বনিম্ন চার বছর থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত ব্যবহার হয়। সুতরাং এটি ভাইরাস বহনের জন্য যথেষ্ট সময়।
আমেরিকা ভিত্তিক জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম সিএনবিসি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে চীনের উহানে করোনা ভাইরাস সংক্রামণ হওয়ার পর ভাইরাস বহণের মাধ্যম হিসেবে চীন সরকার ব্যাংক নোটকে চিহ্নিত করে। তারা দ্রুত উহানে ব্যবহৃত নোটগুলো সংগ্রহ করে। আর ভাইরাস বিস্তার রোধে নোটগুলোকে গেল ফেব্রুয়ারিতে আল্ট্রাভায়োলেট বা তাপ চিকিৎসার মাধ্যমে ভাইরাসমুক্ত করে। এরপরও চীন সরকার সকলকেই ডিজিটাল ব্যাংকিং করার জন্য অনুরোধ করেছে। এদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও বার বার ডিজিটাল বা নোট বিহীন লেনদেনের কথা বলেছে। সংস্থাটি আরো বলেছে, ব্যাংক নোট স্পর্শ করার পর অবশ্যই ভালোভাবে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে।

তুরস্ক :
অন্যদিকে ইতিমধ্যে তুরষ্ক তাদের ব্যাংক নোটকে ভাইরাস মুক্ত করার জন্য অভিনব প্রযুক্তি তৈরি করেছে। তুরস্কের একটি সংস্থা বলছে, নগদ টাকার মাধ্যমে করোনা ভাইরাস ছড়ানোর প্রতিরোধে এাঁ একটা কার্যকর উদ্যোগ।
তুরষ্কের ড্যানিয়া পত্রিকা জানিয়েছে, নোটকে জীবাণু মুক্ত করতে যে প্রযুক্তি তৈরি করা হয়েছে তা একেবারেই ছোট। প্রাথমিকভাবে এই মেশিনের মাধ্যমে স্প্রে করে জীবানু ধ্বংস করে ফেলা হবে। ইস্তাম্বুল টেকনিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত টেকনোপার্ক ভিত্তিক মানি শাওয়ার নামে সংস্থাটি জানিয়েছে, একটি ব্যাংক নোট প্রতি মাসে গড়ে দেড়’শ জন মানুষের হাত বদলায়। এতে ওই দেড়শ মানুষ সংক্রামণের সুযোগ থাকে।

লেখক : ইমরুল কাওসার ইমন, সংবাদকর্মী।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD