রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩, ০২:২৪ পূর্বাহ্ন

করোনা নিয়ন্ত্রণে সামনের এক সপ্তাহ খুব গুরুত্বপূর্ণ

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২০ মার্চ, ২০২০

দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে খুব দ্রুত। ইতিমধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে সেনাবাহিনী। লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলা। এ অবস্থায় দেশে আগামী এক সপ্তাহ করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম স্বাস্থ্য বিভাগের দুই কর্মকর্তা।

বৃহস্পতিবার এমন কথা বলেন চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হাসান শাহরিয়ার কবির ও সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি মিয়া।

সিভিল সার্জন শেখ ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, ‘পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে খুব দ্রুত। আগামী সাতদিন আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থায় স্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও জেলা প্রশাসনকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর প্রায় ২৫ লাখ প্রবাসী দেশে ফিরেছেন। যে যেখান থেকে হোক, তাদের তথ্যগুলো ভেরিফাই করতে হবে। তারা কী অবস্থায় আছে, রোগের কোনো লক্ষণ আছে কিনা, কাদের সঙ্গে থাকছে। এ তথ্য অনুযায়ী সমন্বিত ব্যবস্থা নিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি জানার পর প্রথম সপ্তাহ চলে গেছে। ইতিমধ্যেই আমরা ভালো কিছু প্রস্তুতি নিতে পেরেছি। কারও শরীরে যদি করোনাভাইরাসের উপস্থিতি থাকে তাহলে এই সপ্তাহেই তা প্রকাশ পাবে। এ অবস্থায় কেউ যদি করোনা রোগী হন এবং তার সংস্পর্শে যারা ছিলেন তাদেরকেও স্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে রাখার চিন্তা করা হচ্ছে।’

সিভিল সার্জন বলেন, ‘আশার কথা হচ্ছে চট্টগ্রামে এখনো কোনো করোনা পজেটিভ রোগী পাওয়া যায়নি। অনেকে বলেছেন চট্টগ্রামে করোনা পরীক্ষার সুযোগ নেই। আসলে বিষয়টি পুরোপুরি সত্য নয়। দেশে ভাইরাস পরীক্ষার যে দুটি কেন্দ্র রয়েছে, তার একটি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশান ডিজিজেস হাসপাতাল (তার সঙ্গে কথা বলার পরেই সরকার ঢাকার পর করোনাভাইরাস পরীক্ষার অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে হাসপাতালটিকে)। এখানে সরাসরি করোনার কিট না থাকলেও সাপোর্টিভ টেস্টগুলো করা হচ্ছে।’

চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) হাসান শাহরিয়ার কবির বলেন,‘চট্টগ্রামের ঝুঁকির মাত্রাটা একটু বেশি। কারণ আমাদের বন্দর এবং এয়ারপোর্ট দুটোই আছে। এছাড়া চট্টগ্রামে প্রচুর পরিমাণে বিদেশি থাকেন। তাদের দেশের বাইরে যাওয়ার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। তবে পরিস্থিতির গভীরতা বোঝা যাবে আগামী ৭-১০ দিনের মধ্যে। আসার কথা হচ্ছে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমরা চট্টগ্রামেই করোনা পরীক্ষা করতে সক্ষমতা অর্জন করবো। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক কিট ও স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক-নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুসারে পার্সোনাল প্রটেকশন (পিপিই) পাঠানো হবে।

প্রবাস ফেরতদের হোম কোয়ারেন্টাইন মোনে চলার আহ্ববান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘হোম কোয়ারেন্টাইন একটি সচেতনতার বিষয়। মূলত প্রবাসীরা নিজেরা যদি না বোঝেন কোয়ারেন্টাইন বিষয়টি কী? তাহলে এর সুফল তেমনভাবে পাওয়া যাবে না। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, বিভাগীয় ও জেলা কমিটি একটি রূপরেখা তৈরি করেছে। প্রশাসন ও পুলিশের সহায়তায় বাড়ি বাড়ি খবর নেয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে একজন করোনায় আক্রান্ত রোগী মারা গেছেন। আমরা চাই না চট্টগ্রামে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক।’

চিকিৎসকদের উদ্যেশে সিভিল সার্জন ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, ‘সাধারণত যারা আউটডোরে বা ফ্লুর চিকিৎসা দেবেন তারা হ্যান্ড গ্লাভস, মাস্ক এবং এপ্রোন পরলেই হবে। আর যারা করোনা রোগীদের চিকিৎসা দেবেন তারা প্রয়োজনীয় গ্লাভস ও পিপি পরিধান করবেন। এ ক্ষেত্রে রেইনকোটও ব্যবহার করা যেতে পারে।

তিনি চিকিৎসকদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘প্রয়োজনীয় গ্লাভস ও পিপির মজুদ রয়েছে। উপজেলা পর্যায়েও কিছু কিছু পাঠানো হয়েছে। সরকার একটি সাপ্লাই চেইন তৈরি করেছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেসব আসতে থাকবে।

লাইটনিউজ/এসআই

Please Share This Post in Your Social Media

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD