বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে ওমান। দেশটির শেয়ার বাজারে ধস, গাজা সংকট, অতিরিক্ত বাংলাদেশি কর্মীর চাপ এবং অনেক কর্মীর কর্মসংস্থান সংকটের কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকার এক কূটনীতিক বলেন, বর্তমানে আট লাখ বাংলাদেশি আছেন ওমানে। গত বছর দেড় লাখের বেশি কর্মী ওমানে গেছে। সেখানে বাংলাদেশের সর্বোচ্চসংখ্যক কর্মী। অন্য দেশের এত কর্মী দেশটিতে নেই। অনেক বাংলাদেশি কাজ পাচ্ছে না। এর বাইরে হঠাৎ করে ওদের শেয়ার বাজারে ধস নেমেছে, অর্থনৈতিক সংকট আছে, আবার গাজার সমস্যার প্রভাবও রয়েছে। এসব কারণে এ সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।
বাংলাদেশিদের জন্য সব ধরনের ভিসা দেওয়া স্থগিত করার বিষয়ে ওমান কূটনৈতিক কোনো বার্তা দিয়েছে কি না- জানতে চাইলে এ কূটনীতিক বলেন, না। আমরা ওই রকম কোনো বার্তা পাইনি।
জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, গতকাল বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে ওমানের ভিসা স্থগিতের খবর দেখেছি। মূলত ভিসা অনেক ক্যাটাগরির থাকে। অনেক সময় দেখা যায়, হয়তো কোনো একটা ক্যাটাগরির ভিসা দেওয়া বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কিন্তু সব একেবারে বন্ধ করে দেওয়ার ঘটনা সাধারণত হয় না। ঠিক কি কারণে বন্ধ করা হয়েছে, আমাদের দূতাবাস থেকে জানতে হবে।
ওমানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নাজমুল ইসলামের কাছে ভিসা বন্ধের কারণ জানতে চায়। তবে রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। রয়্যাল ওমান পুলিশ (আরওপি) এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সব ধরনের ভিসা দেওয়া স্থগিত করেছে ওমান। আর এটি মঙ্গলবার থেকে কার্যকর হয়েছে।
রয়্যাল ওমান পুলিশের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, পর্যটক ও ভ্রমণ ভিসায় যেসব বিদেশি ইতোমধ্যে ওমানে এসেছে, তাদের জন্য ভিসা পরিবর্তন কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। এর আগে পর্যটন ও ভ্রমণ ভিসায় ওমানে এসে প্রবাসীরা কর্মী ভিসা নিতে পারতেন। এ সুবিধা স্থগিত হওয়ায় এ রকম যারা ওমানে অবস্থান করছেন, তাদের দেশে ফিরে কাজের ভিসা নিয়ে আবার ওমানে ফিরতে হবে।
আরওপির বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, পর্যটন ও ভ্রমণ ভিসায় সুলতানাত অব ওমানে আসা সব দেশের নাগরিকদের ভিসা পরিবর্তনের সুবিধা স্থগিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশিদের জন্য সব ধরনের ভিসা ইস্যু করাও স্থগিত থাকবে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত এ স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটির) তথ্য বলছে, চলতি বছরে ১৭ হাজার ৬৯৪ জন বাংলাদেশি কর্মী ওমান গেছেন। গত বছর ১ লাখ ৭৯ হাজার ৬১২ জন কর্মী দেশটিতে কর্মসংস্থানের জন্য গেছেন, যা গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ কর্মী যাওয়ার রেকর্ড।