বৃহস্পতিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৫৬ পূর্বাহ্ন

গত ৩০ বছরেও ঢাকা মেডিকেলের এমন দৃশ্য দেখা যায়নি!

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০২০

লাইট নিউজ প্রতিবেদক : গত ত্রিশ বছরেও  ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ  হাসপাতালে এমন রোগী শূন্যতা দেখা যায়নি বলে জানান কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা । এ সুযোগে ডাক্তার, নার্স ও কর্মচারীরা অলস ভাবে দিন কাটাচ্ছেন।   নতুন রোগী ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন রোগী ও তাদের স্বজনেরা। তবে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ বলছেন , করোনা প্রাদুর্ভাব নমুনা মনে হয় সেই সব রোগীকে ভর্তি না নিয়ে তাদেরকে সরকারী নির্ধারীত হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা । নরমা রোগীরা চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং ভর্তি নেওয়া হচ্ছে ।  ছড়িয়ে পড়ার করোনা আতঙ্কে রোগী  কম  আসছে ও ভর্তি হচ্ছে কম । আর যারা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন তারাও স্বেচ্ছায়  চলে যাচ্ছেন ।

রোগী কম স্বজনরা হাসপাতালে আনাগোনা কমে যাওয়ায়  হাসপাতালের পরিবেশ এখন অনেকটা ভুতের বাড়ী মনে হচ্ছে। এর আগে  স্বাভাবিকের অন্যান্য সময় যেখানে হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে রোগী ও রোগীর স্বজনরা পরিপূর্ণ ভাবে থাকতো । এখন সেখানে  নির্জন পরিবেশ বিরাজ করছে । মনে হয় যেন ভূতের বাড়ী !

আজ মঙ্গলবার দুপুরে  হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে এমন চিত্রই দেখা গেছে। আবার যে সব রোগী ভর্তি রয়েছে তাদেরকে ডাক্তারা বাধ্যতামূলক ভাবে ছাড়পত্র দিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেন নতুন ভবনের মেডিসিন ওয়ার্ডের ভর্তিকৃত রোগী  কামরুল হাসান ও তার

স্বজন কামাল হোসেন । তিনি জানান,  হাসান গত এক সপ্তাহ আগে পেটের ব্যথাসহ আরও অন্য সমস্যা নিয়ে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসা থাকা অবস্হায় ২/৩ দিন যাবত সর্দি, কার্শি ও জ্বরে আক্রান্ত হয়। তারজন্য আজকে আমাদেরকে ছাড়পত্র দিয়ে ছেড়ে দেয় ডাক্তার। আরো  বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর জন্য হাসপাতালের অনেক রোগীকে বাধ্যতামূলক ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে সারি সারি বিছানা খালি পড়ে রয়েছে। তবে সাধারন কিছু  রোগী  ভর্তি রয়েছেন।

গত ৩০ বছরেও হাসপাতালে এমন রোগী শূন্যতা দেখেননি বলে  কর্মকর্তা-কর্মচারী জানান । সাধারণত ঢামেক হাসপাতালে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসেন।  হাসপাতালের আনাচে-কানাচে থাকে শুধু রোগী আর রোগী।

রোগীদের ভিড়ে এমনও দেখা গেছে , হাসপাতালের বেড কিংবা ফ্লোরে জায়গা না পেয়ে সিঁড়ির ঢালেও সারিবদ্ধভাবে থাকতেন রোগীরা । এখন মনে হচ্ছে রোগী শূন্যতায় ভুগছে হাসপাতাল! এখন আর সেখানে মানুষজনের আনাগোনাও নেই, নেই নার্স-ডাক্তারদের ছুটোছুটিও।  তারা এখন অলস ভাবে দিন কাটাচ্ছেন। কামঙ্গীর চর কয়লারঘাট থেকে সোনা মিয়া জ্বর, ঠান্ডা, সর্দি সহ নানা রোগে ভুগছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে  তাকে নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের নতুন ভবনে মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসকের কাছে আসেন তার ছেলে হাবিবুর রহমান । চিকিৎসক তার কথা শুনে  কিছু বোঝার আগেই  বাবার ব্যবস্থাপত্রে ওষুধ লিখে দ্রুত বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন চিকিৎসক। অবস্থা বিবেচনা করে বাবাকে ভর্তি নেওয়ার জন্য অনুরোধ করলে চিকিৎসক বলেন, এখন ভর্তি নেওয়া যাবে না।

চিকিৎসকরা  এখন বলে এ পরিস্থিতিতে ভর্তি নেওয়া যাবে না। যদিও সারি সারি সিট খালি পড়ে রয়েছে,’ বলেন তিনি।

হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. মুজিবুর রহমান জানান, রোগীদের ভর্তি নেওয়া হচ্ছে না কথাটি সঠিক নয়। করোনার কারণে চিকিৎসকরা পিপিই (ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম) পরেই রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। যে রোগী ভর্তি হওয়ার দরকার তাদের ভর্তি নিচ্ছে। তবে এমনিতেই রোগীর সংখ্যা খুবই কম।

ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল  এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, সারা দেশে যানবাহন চলছে না। রোগীরা কীভাবে হাসপাতলে আসবে? আমাদের ডাক্তাররা আগের মতই রোস্টার অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছেন। তারা   করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে যা করণীয় সবই ব্যবহার করে ওয়ার্ডে চিকিৎসা দিচ্ছেন রোগীদের।

‘করোনা ভাইরাসের জন্য সবার মনে একটু ভয় আছে। তাই রোগীরা ইচ্ছা করেই হাসপাতাল ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। রোগী যদি স্বেচ্ছায় হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান তাকে তো আর জোর করে আটকানো যাবে না। বাধ্যতামূলক রোগীকে ছাড়পত্র দিয়েছে বা ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসকরা ভর্তি নিচ্ছেন না- এই কথাটি সঠিক না।’ তবে চিকিৎসকরা  রোগীদের দেখে করোনা ভাইরাস সন্দেহ হলে তাদেরকে সরকারী নির্ধারীত হাসপাতালে যেতে পরার্মশ দিচ্ছেন ।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD