জয়পুরহাটে এ পর্যন্ত মোট ৭ হাজার ১২১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬ হাজার ১৮৮টি নমুনার ফলাফল পাওয়া গেছে। ৯৩৩টি নমুনার ফলাফল এখনো মেলেনি। নমুনার ফলাফল আসতে দেরি হওয়ায় নমুনা দেওয়া লোকজনের বেশির ভাগই বাইরে চলাচল করছেন। এতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এ জেলায় মোট করোনায় সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা ২৫৫। এ পর্যন্ত মোট ১৬২ জন সুস্থ হয়েছেন। জয়পুরহাট জেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ জাকির হোসেনের স্বাক্ষরিত জেলার কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমের কর্মীদের কাছে ই-মেইলে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, মোট ৯৩৩টি নমুনার ফল আটকে রয়েছে। এর মধ্যে জয়পুরহাট সদরের ১১৮টি, পাঁচবিবির ১৪৬টি, কালাইয়ের ১৬২টি, ক্ষেতলালের ১৫৮টি, আক্কেলপুরের ২২৪টি ও আধুনিক জেলা হাসপাতালের ১২৫টি।
পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ২১ জুন পর্যন্ত মোট ৬ হাজার ৯৩৯টি নমুনা সংগ্রহ হয়েছিল। ২৩ জুন মোট নমুনা সংগ্রহের সংখ্যা ৭ হাজার ১২১টি। অর্থাৎ গত দুদিনে নমুনা সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১৮২টি। নমুনার ফলাফল ৬ হাজার ১৮৮টি রয়েছে। নতুন করে ফলাফল আসেনি।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, প্রথম দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছিল। এই দুটি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার চাপ বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন রেফারেল সেন্টারের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হচ্ছে। প্রথম দিকে প্রায় প্রতিদিনই নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসছিল। জুন মাস থেকে অনিয়মিতভাবে নমুনা পরীক্ষার ফল আসছে। কখনো ১০ দিন আবার এক সপ্তাহ পর নমুনার ফলাফল মিলছে। নমুনার ফলাফল দেরিতে আসায় নমুনা দেওয়া লোকজনের মধ্যে বেশির ভাগই বাইরে চলাচল করছেন। এতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জয়পুরহাট শহরের বাসিন্দা সোহেল বলেন, ‘আমি গোপীনাথপুর আইসোলেশনের স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে সময় দিয়েছিলাম। এর মধ্যে একজনের করোনা পজিটিভ এসেছে। এরপর আমি ১৩ জুন নমুনা দিয়েছি। এক সপ্তাহেও নমুনার ফল পাইনি। নমুনার ফল না আসায় বাইরে বের হতে পারছি না।’
নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেরিতে আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জয়পুরহাটের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত করোনাযুদ্ধে আমরা সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক তিতাস মোস্তফা। তিনি বলেন, ‘আমরা লক্ষ করছি, নমুনা দেওয়ার ১০ থেকে ১২ দিন পর ফলাফল আসছে। এতে আক্রান্ত ব্যক্তির কাছ থেকে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছি। তাই দ্রুত নমুনা পরীক্ষার ফলাফল দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
জয়পুরহাট জেলা সিপিবির সাধারণ সম্পাদক ও বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক এম এ রশিদ বলেন, এখানে নমুনা পরীক্ষার ল্যাব নেই। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নমুনা সংগ্রহ করে বিভিন্ন ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসতে দেরি হচ্ছে। এতে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে। জয়পুরহাট জেলায় নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাব স্থাপনের দাবি জানান তিনি।
জয়পুরহাটের সিভিল সার্জন সেলিম মিঞা নমুনার ফল দেরিতে আসার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, প্রথমে রাজশাহী ও বগুড়ার ল্যাবে নমুনা পাঠানো হচ্ছিল। দুই স্থানে নমুনা পরীক্ষার চাপ বেড়ে যাওয়ায় ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন রেফারেল সেন্টারে নমুনা পাঠানো হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা অথবা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নমুনার ফলাফল পেলে সংক্রমণ ছড়াবে না। কিন্তু নমুনার ফল পেতে ১০-১২ দিন দেরি হচ্ছে।
লাইট নিউজ