বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:১৪ পূর্বাহ্ন

পেমেন্ট দিতে হিমশিম খাচ্ছে পেট্রোবাংলা ও বিপিসি: সিপিডি

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৩

আমদানি প্রবণতার কারণে পেট্রোবাংলা ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) পেমেন্ট দিতে হিমশিম খাচ্ছে বলে জানিয়েছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থাটি বলছে, দেশীয় তেল-গ্যাস উত্তোলনের চেয়ে আমদানিতে গুরুত্ব বেশি দেওয়ায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এসব কথা বলেন।

সিপিডি প্রতি ৩ মাস পর পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কার্যক্রম ও পর্যবেক্ষণ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রথম কোর্য়াটারের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ওপর রিপোর্ট “পরিবর্তনের পথে বিদ্যুৎ জ্বালানি খাত” প্রকাশ উপলক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আন্তর্জাতিক সরবরাহকারীদের ৬৭০ মিলিয়ন ডলার পেমেন্ট বকেয়া পড়েছে বিপিসির। অন্যদিকে পেট্রোবাংলার এলএনজি আমদানি বাবদ বকেয়া পড়েছে ৩০০ মিলিয়ন ডলারের মতো। এই দায় মেটাতে পেট্রোবাংলা ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইটিএফসি) কাছে ৬ মাসের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার সিন্ডিকেট ঋণ নিচ্ছে। সিন্ডিকেট ঋণ সাময়িক সময়ের জন্য স্বস্তি মনে হলেও বিপদ বাড়াবে। আমরা এখনই বকেয়া পরিশোধ করতে পারছি না, এর সঙ্গে সুদসহ বোঝা যুক্ত হচ্ছে।

আমদানিকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সেভাবে দেশীয় জ্বালানির উত্তোলনে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। যে কারণে আজকের এই সংকট। নতুন গ্যাস কূপ খনন না করলেও পুরাতন গ্যাস কূপের সংস্কার যথা সময়ে হলেও এই সংকট হতো না। যত দ্রুত সম্ভব আমদানি কমানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। বিকল্প জ্বালানির দিকে যেতে না পারলে ডলার সংকট দূর করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন ড. মোয়াজ্জেম ।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ৫১ শতাংশ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেকার পড়ে থাকছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্র এক সময় উদ্বৃত্ত ছিল, এখন উদ্বৃত্ততর থেকে বাহুল্য হয়ে গেছে। যা মাথা ব্যাথার জায়গা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট দেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। পুরাতন বিদ্যুৎ কেন্দ্রে নতুন করে চুক্তি নবায়ন করা উচিত হবে না।

বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিন্ন ভিন্ন ট্যারিফ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবকিছুর মূলে হচ্ছে দায় মুক্তি আইন। যদি প্রতিযোগিতামূলক বাজার থাকত তাহলে এমন অসম চুক্তি হতো না। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পাশে মালিকের নাম পাশে বসালে দারুণ একটি যোগসূত্র দেখা যায়। নির্দিষ্ট কিছু কোম্পানি এসব সুবিধা পাচ্ছে। চুক্তির অস্বচ্ছতার প্রশ্ন থেকেই যায়।

তিনি একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের রিপোর্টের কথা উল্লেখ করে বলেন, ভবিষ্যতে সবচেয়ে সাশ্রয়ী হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি। এমনকি সাশ্রয়ী গ্যাসের চেয়েও কম দাম পড়বে। বাংলাদেশ ২০৪০ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে। তবে তাদের কার্যক্রমের অগ্রগতি গড়ের চেয়ে অনেক নীচে অবস্থান করছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির ১৩টি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে কোনটি নির্ধারিত সময়ে উৎপাদনে আসতে পারেনি। বিলম্বে কিংবা আংশিক উৎপাদনে এসেছে ৪টি, আর ৯টি এখনও উৎপাদনে যেতে পারি।

সাংবাদ সম্মেলনে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির রিসার্স এসোসিয়েটস হেলেন মাশিয়াত প্রিয়তি। এছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD