করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে দেয়া লকডাউনের কারণে ভারতে নিজ বাসস্থান থেকে দূরে আটকে পড়ে আছেন অনেকে। দুই মাস পর ভারত সরকার তাদের বাড়ি ফেরার সুযোগ করে দিয়েছে। ঘোষণা দেয়ার সাথে সাথেই যেনো হুলুস্থুল কাণ্ড। সোমবার মুম্বাইতে বাসে ওঠার জন্যই দেড় কিলোমিটার লম্বা লাইন তৈরি হয়েছে।
এনডিটিভির বরাতে জানা যায়, রোববার সন্ধ্যার পর থেকেই মুম্বাই শহর ও আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ বাসের জন্য নির্ধারিত লাইনে দাঁড়াতে শুরু করে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তা দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ এক লাইনে পরিণত হয়।
এনডিটিভি বলছে, লাইনের যে অবস্থা তাতে দেখা যাচ্ছে ওই ব্যক্তি গত কয়েক ঘণ্টায় মাত্র কয়েকফিট সামনে এগিয়েছে।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তি বলেন, আমি গত রাত ১০টা থেকে এখানে আছি। মাঝে মাঝে লাইন থেকে বের হয়ে ফুটপাতে বিশ্রাম নেই।
ওই ব্যক্তি বলেন, আমাকে জাউনপুর যেতে হবে। আমি মধ্য প্রদেশের একটি বাসে করে আমার রাজ্যের বর্ডারের কাছে গিয়ে নামবো। সেখান থেকে রাজ্য কর্তৃপক্ষ সরকারি খরচে আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেবে।
জানা যায়, লকডাউনের মধ্যে ভারতে যারাই নিজ বাড়িতে ফিরতে চাইছেন তাদের সবাইকে জাতীয় পরিচয় পত্র মোতাবেক তথ্য দিয়ে তারপর বাসে উঠতে হবে। তথ্যে অসাঞ্জস্যতা থাকলে এ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হবে।
লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক ব্যক্তি বলেন, আমি রোববার সন্ধ্যায় শুনতে পেরেছি যে আমাদের জন্য বাস সুবিধা দেয়া হবে। সেই খবর শুনেই আমি গতকাল সন্ধ্যা থেকে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি।
ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশব্যাপী লকডাউন জারি করেন। এ কারণে অনেকেই বাড়ির বাইরে আটকা পড়ে আছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘসময় অতিবাহিত করার কারণে তারা ধৈর্য্য হারাচ্ছেন।
গতকাল রোববার আরো এক দফা লকডাউন বাড়িয়েছেন মোদি। এমন সিদ্ধান্তের দরুন ধৈর্য্য হারিয়ে মানুষ পায়ে হেঁটেই নিজ গন্তব্যের পথে যাত্রা শুরু করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই সরকার থেকে বাসের ব্যবস্থা করা হয়।
ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রাজ্যগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমিত রোগী পাওয়া গেছে মহারাষ্ট্রে। রাজ্যটিতে আক্রান্তের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৩৩ হাজারের বেশি।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট ৯৬ হাজারের বেশি করোনায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। মৃতের সংখ্যা প্রায় তিন হাজার।
লাইট নিউজ