চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাটকুল। কোনো এক সময় ঐতিহ্যবাহী নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাটকুল হিসেবে পরিচিত ছিল এটি। যে ঘাটকুল দিয়ে নৌকার সাহায্যে মানুষ কর্ণফুলী নদী পারাপার হত। নিজের গন্তব্যস্থলে যেত অনায়াসেই।
উপজেলার লাম্বুর হাট, বোয়ালখালী, কালুরঘাট, চট্টগ্রাম নগরীর মোহরাসহ বিভিন্ন দূরদূরান্তে মানুষ যাতায়াত করত এই চৌধুরী ঘাটকুল দিয়ে। কিন্তু আগের মতো এই ঘাট দিয়ে যাতায়াতের চিত্র আর দেখা যায় না।
স্থানীয় নৌকার মাঝিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অনেক বছরের পুরনো নোয়াপাড়ার চৌধুরী ঘাটকুলের আগের ঐতিহ্য এখন আর নেই। আধুনিকতার ছোঁয়ায় হারিয়ে গেছে নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাটকুলের ঐতিহ্য। আগে যেখানে শতাধিক নৌকা ছিল সেখানে বর্তমানে মাত্র ১৯টির মতো নৌকা বা ইঞ্জিল চালিত বোট রয়েছে। বাপ-দাদার আমলের পুরনো পেশা আঁকড়ে ধরে কোনোরকমে সংসার চলে তাদের।
জানা গেছে, এই চৌধুরী ঘাটকুল দিয়ে এক সময় ব্যবসায়ীরা নৌকার মাধ্যমে নোয়াপাড়া, চৌধুরী হাট, বাহ্মণহাট, গশ্চি নয়াহাট, পাহাড়তলীসহ বিভিন্ন স্থানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রির জন্য আনা নেওয়া করত। কিন্তু উন্নত সড়ক ব্যবস্থার কারণে ব্যবসায়ীরা নৌপথে আর চলাচল করেন না। চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক হয়ে ব্যবসায়ীরা নিত্যদিনের কাজ করেন। তবে চৌধুরী হাটের কিছু ব্যবসায়ী এখনও নৌপথে নিত্যপণ্য আনা নেওয়ার ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন।
এই ঘাট দিয়ে যাতায়াত করে থাকে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। তার মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষক, সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা কর্মচারীসহ অনেকে। বিশেষ করে কর্ণফুলী নদীর ওপারে বোয়ালখালী উপজেলা হওয়াতে সেখানে কর্মরত বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা এই ঘাট দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে। তাছাড়া কর্ণফুলীর ওপারে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যেতেও ঐতিহ্যবাহী নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাটকুল ব্যবহার করে।
ঐতিহ্যবাহী নোয়াপাড়া চৌধুরী ঘাটকুল বিষয়ে জানতে চাইলে রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোনায়েদ কবির সোহাগ জানান, অনেক বছরের পুরনো চৌধুরী ঘাটকুল বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ব্যবহার কমে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্যে মানুষ এখন নৌপথে আসা যাওয়া করে না। সড়কপথে প্রয়োজনীয় কাজ সেরে নেন। খুব কম সংখ্যক লোক নৌকা ব্যবহার করে। যার কারণে আগের ঐতিহ্য হারিয়ে গেছে।
লাইটনিউজ/এসআই