বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রর্দুভাবে কুপকাত সারা বিশ্ব। ব্যতিক্রম ছিল না থাইল্যান্ডও। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে দেশটি ধার্য্য করেছিল নানা ধরনের বিধি নিষেধ। বলা চলে সারা পৃথীবি থেকে বেশ কয়েক মাস বিচ্ছিন্ন ছিল পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণের কেন্দ্র বিন্দু থাইল্যান্ড। ফলে অনেকটাই চ্যালেঞ্জিং সময় কাটিয়েছে এখানে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, থাইল্যান্ডে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের বেশি সংখ্যক বসবাস করেন দেশটির অন্যতম পর্যটন নগরী পাতায়াতে। সেখানে কাপড়, হোটেল, গেস্ট হাউজ, রেস্টুরেন্ট, ট্যুরিজমসহ আরো বেশ কিছু ব্যবসা করেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। করোনাভাইরাসের মহামারীরর সময় বন্ধ হয়ে যায় সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ফলে দীর্ঘ সময় ধরেই অফিস, রেস্টুরেন্ট এবং হোটেল ভাড়া গচ্চা দিতে হয় তাদের। সারা জীবনের গচ্ছিত সঞ্চয়ও শেষ হয়ে আসে। তারপরও টিকে থেকে আবারো নতুন করে জীবন যুদ্ধ শুরু করেছেন এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
প্রবাসী বাংলাদেশী পাতায়া এসোসিয়েশনের সভাপতি কামরুল হাসান বলেন, সারা পৃথীবির মতো থাইল্যান্ডও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষ করে থাইল্যান্ডে যারা ট্যুরিজম কিংবা হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট ব্যবসা করতেন তাদের লোকসান হয়েছে অনেক বেশি। তিনি আরো বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে সব কিছু বন্ধ থাকার পর আবারো নতুন করে সব খুলতে শুরু করেছে। আমাদের প্রবাসী বাংলাদেশী ভাই-বোনরাও নতুন করে স্বপ্নে বুক বাঁধতে শুরু করেছেন। করোনাভাইরাসে যে লোকসান হয়েছে সেটা তো আর কোনোভাবেই পুশিয়ে উঠা সম্ভব নয়। কিন্তু নতুন করে সংগ্রম করে টিকে থাকা সম্ভব।
প্রায় ২৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে থাইল্যান্ডের পাতায়া নগরীতে বসবাস করছেন নাজীর আহমেদ সরকার। জানতে চাইলে তিনি বলেন, করোনাভাইরাস আমাদের এক বিশাল শিক্ষা দিয়ে গেছে। সঞ্চয় যে কতটুকু গুরুত্বপূর্ণ সেটা আর বলার অবকাশ রাখে না। তিনি আরো বলেন, আমার ট্যুরিজম এবং কাপড়ের ব্যবসা। মহামারীতে সব বন্ধ হয়ে যায়। এখনও পুরোপুরি সব কিছু খুলেনি। আরো খানিকটা সময় লাগবে। তিনি আরো বলেন, করোনা মহামারী যেতে না যেতে ইউক্রেন এবং রাশিয়ার যুদ্ধও থাইল্যান্ডের পর্যটন খাতে প্রভাব ফেলেছে। রশিয়ান এবং ইউক্রেনিয়ান পর্যটকের সংখ্যাও আশানুরূপ নয়। গেল কয়েক বছর আগে থাইল্যান্ডের পূর্ণ নাগরিকত্ব পেয়েছেন নাজির আহমেদ সরকার। তিনি বলেন, করোনাকালীন সময়ে ঘরে বসে না থেকে নিজেদের পরিত্যাক্ত জমিতে ফার্মিং করেছেন তিনি। চালু করেছেন নতুন প্রতিষ্ঠান।
করোনায় সময়ে হাত পা গুটিয়ে বসে না থেকে জীবযুদ্ধে টিকে থাকার শতভাগ প্রায়স চালিয়েছেন আরেক পাতায়া প্রবাসী তৌফিক রহমান। তিনি বলেন, পর্যটন ব্যবসার পাশাপাশি আমার ট্রান্সপোর্টের ব্যবসাও ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে বিপুল ক্ষতির শিকার হই। পরবর্তিতে টিকে থাকার জন্য একটি রেস্টুরেন্ট চালু করি। কিন্তু নানান ধরনের প্রতিকূলতার কারণে মেষ পর্যন্ত সেটিও ধরে রাখা সম্ভব হয়নি। তিনি আরো বলেন, থাই সরকার এখানে করোনাকালীন বেশ কিছু সুবিধা দিয়েছে। এর ফলে টিকে থাকার জন্য কিছুটা হলেও সাপোর্ট পেয়েছি।