কক্সবাজারের টেকনাফে পৃথক অভিযানে মিয়ানমারের দুই নাগরিকসহ চারজন সংঘবদ্ধ চোরাকারবারিকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৭ কোটি ৭৪ লাখ টাকা মূল্যের ২ লাখ ৫৮ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতরা হলেন— হ্নীলা ইউপির ফুলের ডেইল এলাকার মো. রবিউল ইসলামের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম (৪২), সাবরাং ইউপির শাহপরীর দ্বীপের মো. কালু মিয়ার ছেলে মো. হাফেজ আহমেদ (৪০), মিয়ানমারের আকিয়াব জেলার মন্দ্রাছে এলাকার মৃত উ চিংয়ের ছেলে ছেওয়াচি (৩৮) ও রয়েমপ্রি থানার দব্রিছাই গ্রামের মৃত উপান জ্য এর ছেলে নেম ইউ চ্য (৩৬)।
বৃহস্পতিবার রাতে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন অধিনায়ক লে. কর্নেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গত বুধবার নাফ নদে একটি ট্রলারকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) ৩টি স্পিডবোট নিয়ে ধাওয়া দিলে চারজন ব্যক্তি বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশ করেন। তারা তাদের ট্রলার সাবরাং বিওপির বিআরএম ৫ থেকে প্রায় ৪০০ গজ দক্ষিণ-পূর্ব দিকে জিন্নাহখাল নামক স্থানে বালুচরের ওপরে উঠিয়ে দেয়।
পরে ওই ট্রলারে থাকা চারজন ব্যক্তি পালিয়ে যাওয়ার সময় বিজিবি টহল দল তাদের আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তিদের কথাবার্তায় সন্দেহজনক হলে ট্রলারটিকে বৃহস্পতিবার টেকনাফ জেটিঘাটে নিয়ে আসা হয়। সন্ধ্যা ৬টায় ট্রলারটি তল্লাশি করে ইঞ্জিনের নিচ হতে অভিনব পদ্ধতিতে লুকানো একটি বস্তা উদ্ধার করা হয়। ওই বস্তার ভিতর ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকার ৭৮ হাজার পিস নিষিদ্ধ ইয়াবা পাওয়া যায়।
আটক ব্যক্তিকে নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।
তিনি আরও জানান, একই দিনে হোয়াইক্যং ইউপির খারাংখালী বিওপির উত্তর দিকে নাফ নদের সীমান্ত দিয়ে মাদকের একটি বড় চালান নিয়ে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচারের গোপন সংবাদ পেয়ে বেড়িবাঁধে কৌশলে অবস্থান করে বিজিবি টহল দল।
রাতে ৫/৬ জন মাদককারবারি একটি কাঠের নৌকায় করে মিয়ানমার থেকে শূন্যরেখা পার হয়ে এ পাশের নাফ নদের তীরে ভিড়ে। ওঁৎ পেতে থাকা ২-৩ জন লোক বেড়িবাঁধ দিয়ে নিচে গিয়ে ওই নৌকাটির কাছে যায়। নৌকা থেকে মাদকের চালান নেওয়ার সময় বিজিবির টহল দল তাদের ধাওয়া করলে মাদককারবারিরা গুলি ছুড়ে।
আত্মরক্ষার্থে বিজিবির টহল দলও পাল্টা গুলি চালায়। একপর্যায়ে অজ্ঞাতনামা মাদককারবারিরা নৌকা থেকে লাফিয়ে নাফ নদে সাঁতার দিয়ে মিয়ানমারে পালিয়ে যায়। টহল দল ঘটনাস্থলে তল্লাশি চালিয়ে নদীর তীরে দুটি বস্তা উদ্ধার করে। ওই বস্তায় ৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ১ লাখ ৮০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করে।