বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:২৭ পূর্বাহ্ন

মুসলিম নারীর পবিত্রতাবিষয়ক ৮ বিধান

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ২৭ আগস্ট, ২০২২

ইসলামে নামাজসহ একাধিক ইবাদতের জন্য পবিত্রতার শর্তারোপ করা হয়েছে। তাই প্রতিটি ইবাদতের আগে সে সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করা সবার ওপর ফরজ। আল্লাহ তাআলা পুরুষকে যেমন জ্ঞানার্জনের নির্দেশ দিয়েছেন, তেমনি নারীকেও জ্ঞানার্জনের নির্দেশ দিয়েছেন। জ্ঞানার্জনের অন্যতম দিক হলো, প্রয়োজনীয় মাসআলা-মাসায়েল সম্পর্কে জানা।

এখানে নারীদের পবিত্রতা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজনীয় কিছু মাসয়ালা নিয়ে আলোচনা করা হলো—
টয়লেট শেষে টিস্যু ও পানি ব্যবহার

ইসলামের নিয়ম হলো, টয়লেটে শেষে নারী-পুরুষ উভয় ঢিলা বা টিস্যু ও পানি ব্যবহার করবে। নারীদের মলমূত্র ত্যাগের পর পানি ও টিস্যু উভয়টি ব্যবহার করা উত্তম। আর পেশাবের পর শুধু পানি ব্যবহার করে নিলেই চলবে। এ ক্ষেত্রে ঢিলা বা টিস্যু ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। তবে পুরুষের জন্য টয়লেট শেষে টিস্যু ও পানি উভয়টি নেওয়াই উত্তম। (রদ্দুল মুহতার ১/৩৩৭,আলমুহিতুল বুরহানি ১/৪৩)

লিপস্টিক ও নেইলপলিশ অবস্থায় অজুর বিধান

ইসলামে নারীদের জন্য মেহেদি ব্যবহার করা জায়েজ এবং মেহেদি থাকাবস্থায় অজু করা জায়েজ। কারণ তা চামড়ার মাঝে পানি প্রবেশ করতে বাধা দেয় না। এ ব্যাপারে সব ফিকাহবিদ একমত। তবে লিপস্টিক ও নেইলপলিশ এর বিপরীত। কারণ এগুলো চামড়ায় পানি প্রবেশ করতে বাধা প্রদান করে থাকে। অথচ শরীরে পানি প্রবেশ না করলে অজু-গোসল বৈধ হয় না। তবে মেহেদির মতো যদি পলিশের কোনো প্রলেপ না থাকে তাহলে অজু শুদ্ধ হবে। (খোলাসাতুল ফাতওয়া : ৪/৩৭৭, ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া : ১/২)

মাছের রক্ত মাখা কাপড়ের বিধান

সাধারণত নারীরা ঘরে রান্নার কাজ করে থাকেন। তাই প্রায় বাসায় ছোট-বড় মাছ কাটতে হয়। অনেক সময় কাপড়ে মাছের রক্ত লেগে যায়। তখন সন্দেহ হয় কাপড় নাপাক হয়ে গেল কি না। এ ক্ষেত্রে বিধান হলো, যেহেতু মাছের রক্ত অপবিত্র নয়, তাই মাছের রক্ত কাপড়ে লাগলে কাপড় অপবিত্র হবে না। সুতরাং মাছের রক্ত মাখা কাপড়ে সব ধরনের ইবাদত করতে কোনো বাধা নেই। তবে উত্তম হলো কাপড় পরিবর্তন করে ইবাদত করা। (মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা, হাদিস : ২০৩৬, আলমাবসুত, সারাখসি: ১/৮৭)

ফরজ গোসলে চুল ধোয়ার বিধান

ফরজ গোসলে নারীদের চুল খোলা থাকলে পুরো চুল ধোয়া ফরজ। আর বাঁধা থাকলে পুরো চুল ধোয়া ফরজ নয়। শুধু চুলের গোড়ায় পানি পৌঁছানোই যথেষ্ট। (শরহু মুশকিলিল আসার, হাদিস : ৩৮৫৪)

ফরজ গোসলে নারীদের লজ্জাস্থানের বহিরাংশে পানি পৌঁছালে ফরজ আদায় হয়ে যায়। অভ্যন্তরীণ অংশে পানি পৌঁছানো জরুরি নয়। আর রোজা অবস্থায় নারীদের ভেতরাংশে যেন পানি না পৌঁছে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। কেননা ভেতরে যাওয়ার দ্বারা রোজা ভেঙে যাবে। (রদ্দুল মুহতার ১/১৫২)

বোরকা বা শাড়িতে রাস্তার কাদা লাগার বিধান

নারীদের যেহেতু টাখনুর নিচে কাপড় পরার বিধান, তাই বৃষ্টির দিনে অনেক সময় রাস্তায় বের হলে রাস্তার কাদা বোরকা, শাড়ি ও জামা-কাপড়ে লেগে যায়। তখন অনেকের ধারণা হয় যে কাপড় অপবিত্র হয়ে গেছে। অথচ বিষয়টি এমন নয়। কারণ রাস্তার কাদা নাপাক নয়; কিন্তু কাদামাটির মধ্যে নাপাকি দৃশ্যমান হলে কাদার ওই অংশ অপবিত্র বলে গণ্য হবে এবং কাপড়ে এ ধরনের কাদা বেশি পরিমাণে লেগে গেলে তা নিয়ে নামাজ শুদ্ধ হবে না। তা ধুয়ে নিতে হবে। তবে ধোয়ার সুযোগ থাকলে এমন ময়লা কাপড়ে নামাজসহ অন্য ইবাদত না করাই ভালো। (কিতাবুল আসল : ১/৫২, আলমাবসুত, সারাখসি : ১/২১১)

শিশুকে দুধ পান করানো অবস্থায় অজুর বিধান

নারীরা শিশুকে দুধ পান করানোর দ্বারা তাদের অজু ভঙ্গ হবে না। তবে নামাজ অবস্থায় কোনো শিশু দুধ পান করে নিলে নামাজ ভেঙে যাবে। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/৬২৫)

ছোট বাচ্চার বমি ও নাকফুলের বিধান

দুগ্ধপায়ী ছোট বাচ্চা মুখ ভরে বমি করলে তা বড় মানুষের মতোই নাপাক এবং তা কাপড়ে পড়লে ধৌত করতে হবে। মুখ ভরে বমি না করলে তা নাপাক হবে না। (আদ্দুররুল মুখতার : ১/১৩৭)

আর অজু-গোসল করার সময় নারীদের নাকফুলের ছিদ্রে পানি পৌঁছানো জরুরি। (আল মুহিতুল বুরহানি : ১/৮০)

ধাতুরোগে আক্রান্ত নারীর অজুর বিধান

যেসব নারী ধাতুরোগে আক্রান্ত, তাদের অজুু নষ্ট হওয়ার ভয়ে যদি কেউ টিস্যু বা তুলা ধাতু আসার রাস্তায় এমনভাবে রাখে, যাতে ধাতু বাইরে আসতে না পারে, তাহলে এ অবস্থায় সব ইবাদত আদায় করতে কোনো অসুবিধা হবে না; বরং এটিই রোগীর জন্য উত্তম পন্থা। হ্যাঁ, তুলা বা টিস্যু পেপারের বহিরাংশ যদি ভিজে যায়, তাহলে অজু নষ্ট হয়ে যাবে। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া ১/১০)

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD