স্পোর্টস রিপোর্টার : আজ ৬ সেপ্টেম্বর; তার জন্মদিন। ১৯৯৫ সালের আগে আজকের দিনে সাতক্ষীরায় জন্ম বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে হিসেব করলে কাটার মাস্টার মোস্তাফিজের আজ (রোববার) বয়স ২৫ পূর্ণ হলো।
সকাল হয়েছে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, ভক্ত-সমর্থক ও শুভানুধ্যায়ীদের শুভেচ্ছায়। সহযোগী ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই শুভেচ্ছা ও ভালবাসায় সিক্ত করেছেন।
দুপুরে সে কথা জানিয়ে মোস্তাফিজ বলেন, ‘জন্মদিন উপলক্ষ্যে সকাল সকাল অনেক শুভেচ্ছা পেয়েছি। অনেকেই ভালবাসায় সিক্ত করেছেন। আমাদের ক্রিকেটারদের হোয়াটসআপ গ্রুপ আছে। সেখানে সাথের ক্রিকেটাররা অনেকেই জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে। ছোট-বড় সবার শুভেচ্ছা ও ভালবাসায় সিক্ত হয়েছি।’
ভেবেছিলেন অন্যান্য দিনের মত আজ জন্মদিনের সকাল-দুপুরটিও হোম অব ক্রিকেটে কাটবে। কিন্তু তা হয়নি। জন্মদিনের প্রথম প্রহর কাটল মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের খুব কাছে নিজ বাসায় একা। সাপোর্টিং স্টাফদের তিনজন করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় প্র্যাকটিস বন্ধ। তাই মাঠে যাওয়ার সুযোগ নেই। অগত্যা ঘরে বসেই জন্মদিন পালন করতে হচ্ছে।
তা নিয়ে অবশ্য খুব বেশি আফসোস নেই। তার চেয়ে বেশি খারাপ লাগছে মাঠে গিয়ে ফিটনেস ট্রেনিং ও বোলিং অনুশীলন করতে না পারায়। মোস্তাফিজের কথা, ‘আমি সব মিলে ১২-১৩ দিনের মত প্র্যাকটিস করেছি। শেষ তিনদিন করা হয়নি। আবার যাবো ঠিক করেছি, এর মধ্যে প্র্যাকটিসটা হঠাৎ বন্ধ। একটু খারাপ লাগছে। অনুশীলনটা চালিয়ে যেতে পারলে ভাল হতো। ছন্দ ফিরে পেতে সহায়ক হতো।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তো গত মাসের (আগস্ট) ১৬ তারিখে প্র্যাকটিস শুরু করেছি। এর ভেতরে শেষ তিনদিন অনুশীলন করিনি। কাজেই দুই সপ্তাহ পুরো হয়নি এখনও। এখন অনুশীলন বন্ধ হওয়া মানে ধারাবাহিকতা শেষ। প্র্যাকটিসটা চালিয়ে যেতে পারলে ভাল হতো। তারপরও যতটা হয়েছে মন্দ না। আমি কষ্ট করেছি। ছন্দে ফেরার চেষ্টা ছিল।’
মোস্তাফিজের অনুভব, ‘যতই কঠোর ও নিবিড় অনুশীলন করেন না কেন, আসল হলো ম্যাচ খেলা। একজন বোলার নেটে এবং ব্যক্তিগতভাবে যত হাড় ভাঙ্গা পরিশ্রমই করুক না কেন, বোলিং কোচ তাকে যত গাইড করুক আর কার্যকর পরামর্শ দিক না কেন; বোলিংয়ে উন্নতি ঘটাতে হলে এবং ছন্দ পুরো পেতে চাই ম্যাচ খেলা। খেলে খেলেই আসলে নিজের উন্নতি ঘটাতে হয়। আমিও ম্যাচ খেলতে মুখিয়ে আছি।’
এদিকে তার সামনে এসেছিল ম্যাচ খেলার সুযোগ। জমজমাট ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক আসর আইপিএল থেকে প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য তা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। পুরো ব্যাপারটি কী?
পাঠকদের জন্য কাটার মাস্টারের জবাব, ‘আমাকে আইপিএলের দুটি দল (নাম প্রকাশ করেননি, তবে ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে কলকাতা নাইট রাইডার্স ও মুম্বাই ইন্ডিয়ানস) অফার করেছিল। কিন্তু আমার পক্ষে সে অফার গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। কী করে হবে বলুন? আমি তো তখন শ্রীলঙ্কা থাকবো। জাতীয় দলের সফরসঙ্গী হয়ে থাকার সময় তো আর আইপিএল খেলা যায় না।’
কথা প্রসঙ্গে মোস্তাফিজ একটি বিষয় পরিষ্কার করেছেন। সাধারণ পাঠকদের জানা মোস্তাফিজ না করে দিয়েছেন। আসলে তিনি নন, আইপিএলের দলগুলোর অফার পাওয়ার পর কাটার মাস্টার বিসিবির সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন দল দুটিকে।
বোর্ড তাদের জানিয়ে দিয়েছে যে, আইপিএল চলাকালীন জাতীয় দল শ্রীলঙ্কা সফরে যাবে। ঐ সময় মোস্তাফিজও দলের সঙ্গে থাকবে। তাই তার পক্ষে আইপিএল খেলা সম্ভব না। একই সুরে মোস্তাফিজের কথা, ‘দেশের হয়ে খেলার চেয়ে তো আর আইপিএল বড় না। তাই আমার ও নিয়ে তেমন আফসোস নেই, আক্ষেপ নেই।’
লাইটনিউজ