নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে অনৈতিক কাজের অপবাদ দিয়ে এক নারীকে (৩৬) সমস্ত শরীর বিবস্ত্র করে নির্যাতন করেছে একদল যুবক। নির্যাতনকারীদের বারবার বাবা ডেকেও শেষ রক্ষা হয়নি ওই নারীর। গতকাল রোববার দুপুর থেকে নির্যাতনের এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগেরমাধ্যমে ভাইরাল হলে জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে আগের স্বামী ওই নারীর সঙ্গে দেখা করতে তার ঘরে প্রবেশ করেন। বিষয়টি দেখতে পায় স্থানীয় মাদকব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে প্রবেশ করেন এবং পর পুরুষের সাথে অনৈতিক কাজ করেছে বলে অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করেন। একপর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করা হয়।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, নির্যাতনকারীদের মধ্যে এক যুবক নারীর পরনে থাকা জামাকাপড় টেনে-হিঁচড়ে সম্পূর্ণ খুলে ফেলে। এ সময় ওই নারী বিছানার চাদর, তোষক, খাটের ওপর থাকা বিভিন্ন কাপড় দিয়ে নিজের দেহ ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু নির্যাতনকারীদের মধ্যে কয়েকজন চারদিক থেকে কাপড়গুলো টেনে সরিয়ে দেয়। এক যুবক নারীর মুখে বারবার লাথি মারে। একজন তার মুখ ও বুকের বিভিন্ন স্থানে কামড় দেয়। এক যুবক নারীর গোপনাঙ্গে বারবার হাত দেয় ও আঘাত করে। আরেক যুবক তার গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। নির্যাতনকারীদের বারবার বাবা ডেকেও রক্ষা পাননি ওই নারী।
ছড়িয়ে পরা ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে এক নারী সম্পূর্ণ বিবস্ত্র অবস্থায় গোঙাচ্ছে, কাঁদছে; সেই সঙ্গে বলছে-বাবা গো আমাকে ছেড়ে দে। “আব্বা গো তোর আল্লাহ’র দোহাই ছাড়ি দে! আশপাশের ২০-২৫ বছরের ছেলেগুলো হায়েনার মতো হাসছে আর বলছে-উল্টা, উল্টা, উল্টা! কারণ বিবস্ত্র ওই নারী নিজেকে বাঁচানোর জন্য উপুড় হয়ে শুয়ে কাঁদছিল আর বলছিল-এরে আব্বা গো, তোগো আল্লাহ’র দোহাইরে। ভিডিওটার পুরো সময়টায় ওই নারী গোঙাচ্ছিল, কাঁদছিল আর বলছিল- বাবা গো, ছাড়ি দে।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তাদের মধ্যে দুইজনকে নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-১১)। তারা হলেন-এ ঘটনার প্রধান আসামি বাদল ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। এছাড়াও গ্রেপ্তার অপর দুইজন আবদুর রহিম ও রহমত উল্লাহ।
লাইটনিউজ