বুধবার, ২২ মার্চ ২০২৩, ০২:৫৫ পূর্বাহ্ন

উত্তরাঞ্চলে চেপে বসেছে ঘন কুয়াশা ও শীত, অচল জীবনযাত্রা

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৩

ঘন কুয়াশার সঙ্গে কনকনে শীত ও হিমেল বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরের জনজীবন। গত এক সপ্তাহ থেকে শীতের হানায় কাবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের দরিদ্র ও ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী। আকাশ ভেঙে ঝরা হিম-ঠাণ্ডা ঘনকুয়াশা অচল করে দিয়েছে জীবনযাত্রা।

নতুন বছরের চলতি সপ্তাহজুড়েই উত্তরাঞ্চলে মৃদু ও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা পর্যন্ত রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১১ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল সোমবার রংপুরে জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ১১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা গতকালের চেয়ে শূন্য দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম।

এবারের শীতে এরই মধ্যে গত তিনদিন থেকে প্রথম দফায় উত্তরাঞ্চলে শৈত্য প্রবাহ চলছে বলে জানিয়েছেন রংপুর আবহাওয়া অফিস। গত দুইদিন থেকে ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় তীব্র হয়ে উঠেছে কনকনে শীত। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক কাজকর্ম। ঠাণ্ডায় নাকাল হয়ে পড়ছে চরাঞ্চলসহ ছিন্নমূলের অসহায় মানুষজন।

আবহাওয়া অফিস বলছে, শীতের এ তীব্রতা দুই এক দিনের মধ্যে আরও বাড়তে পারে।

এদিকে ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীত চেপে বসেছে তিস্তা, ঘাঘট, দুধকুমার, যমুনেশ্বরী ও করতোয়া নদী বেষ্টিত এলাকাগুলোতে। একদিকে কনকনে শীত আর বেলা গড়িয়ে যাওয়ার সাথে সাথে শুরু হয় ঠাণ্ডা বাতাস। রংপুর অঞ্চলে বেলা দুপুর নাগাদ সূর্যের দেখা মিললেও নেই তেমন উষ্ণতা। এই অঞ্চলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ওঠানামা করছে ১০ থেকে ১১ ডিগ্রিতে । নদী তীরবর্তী বেশির ভাগ এলাকার মানুষ খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। শীতের এই হানায় প্রভাব ফেলেছে কৃষকের ধানের বীজতলাতেও। হিমেল বাতাস শীতের তীব্রতা অনেকাংশে বাড়িয়ে দিয়েছে। ঘন কুয়াশার কারণে হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন।

রংপুর নগরীর তাজহাট এলাকার সুমন আওলাদ বলেন, গত দুই রাত থেকে এতো পরিমানে কুয়াশা পড়ছে যে হাঁটলেই চোখের পাতা ও মাথার চুল ভিজে যাচ্ছে। চলার সময় সামনের ১০ হাত পরের কিছুই দেখা যায়না। এই কুয়াশার সাথে বাতাসটা একদম আমাদেরকে কাবু করে ফেলেছে।

নগরীর নগরমীরগঞ্জ এলাকার কৃষক মনিরুজ্জামান বলেন, গত দুই দিন থেকে যে পরিমানে শীত পড়ছে তাতে আমাদের কৃষি কাজ অনেকটা ব্যহত হচ্ছে। ধানের বীজতলা ঘনকুয়াশায় হলুদ রঙ ধারণ করে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আলুর ক্ষেতের কাজে কোনো লোক পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি বলেন, শীতে যখন জমিনে খালি পা রাখি মনে হয় মরি গেছি। কিন্তু উপায় নাই কাজ করি খাওয়া লাগবে তাই বের হইছি। এবারের শীতে হাত পা খালি টাটায় মনে হয় অবশ হয়ে গেছে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ডিসেম্বরের শেষে উত্তরাঞ্চলে শৈত্য প্রবাহ শুরু হয়েছে। এর সাথে শীতের তীব্রতাও খুব বেড়েছে। এই অঞ্চলে গত তিন চার দিন থেকে তাপমাত্রা ১০-১১ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। দিনে ও রাতের তাপমাত্রা কাছাকাছি হওয়ায় এ অঞ্চলে ঘনকুয়াশার সাথে হিমেল হাওয়াসহ শৈত্য প্রবাহ আরও তীব্র হতে পারে। তবে এই তাপমাত্রা আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে কিছুটা উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

সরকারি হিসেবে মোট জনসংখ্যার ৪০ভাগ দরিদ্র। পশ্চাদপদ এই অঞ্চলে দারিদ্র আরও কিছুটা ভয়াবহ। এবারের তীব্র এই শীত গৃহহীন ছিন্নমূল মানুষের জীবনে নেমে নেমেছে দুর্বিসহ কষ্ট হয়ে। হিমালয়ের কাছাকাছি হওয়ায় দেশের শীতপ্রবণ এলাকা হিসাবে পরিচিত এই রংপুর অঞ্চল।

Please Share This Post in Your Social Media

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD