চক্রটির একজন নিজেকে পরিচয় দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব বলে। আরেক সদস্য নিজেকে পরিচয় দেন কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার। এভাবে ভুয়া পরিচয়ে চাকরি দেওয়ার নামে মানুষের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে কুমিল্লা জেলা পুলিশ। সবশেষ কুমিল্লায় ট্রেনিং রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগ পাইয়ে দেওয়ার নামে প্রতারণার পর ধরা পড়ে চক্রটি।
বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মো.আব্দুল মান্নান। এ সময় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) খন্দকার আশফাকুজ্জামান, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাজেশ বড়ুয়াসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন মেরাজুল ইসলাম ওরফে লায়ন মেরাজ (৪৬), জামান খন্দকার ওরফে আলীমুজ্জামান (৪৩) ও তাদের সহযোগী রিপন ফকির (৩৭)। তারা বিভিন্ন মামলার আসামি এবং সাজাপ্রাপ্ত।
তাদের মধ্যে মেরাজ নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব ও আলীমুজ্জামান পুলিশ সুপার বলে পরিচয় দেন। তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন, সিমকার্ড, আত্মসাৎকৃত ছয় লাখের মধ্যে দুই লাখ টাকাসহ প্রতারণার বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান জানান, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের সময় চাকরি দেওয়ার কথা বলে মরিয়ম বেগম নামের এক নারীর কাছ থেকে ঘুষ হিসেবে ছয় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। প্রতারক মেরাজুল ইসলাম ফোনে প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিব, মো. আলীমুজ্জামান কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপারের পরিচয় দেন। আর রিপন ফকির তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। তাদের সবার বাড়ি মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এ ঘটনায় কুমিল্লার মুরাদনগর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার জানান, মরিয়ম বেগম তার নাতি ফাহিমের জন্য পুলিশে চাকরির চেষ্টা করে প্রতারণার শিকার হচ্ছিলেন। ঘটনাটি পুলিশ টের পেয়ে যাওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতারকদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ইতোমধ্যে দুই লাখ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, গত ১১ থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিকাশ ও নগদে প্রতারকরা টাকা নেন। এসব টাকা ঢাকা, মাদারীপুর ও সুনামগঞ্জ থেকে তোলা হয়।
আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- তারা দীর্ঘদিন ধরে ‘হ্যালো পার্টি’র মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের অফিসারদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা করে আসছিলেন।