চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বিশেষায়িত করোনা ইউনিট তৈরির কাজ প্রায় শেষ করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর হাসপাতালের নবনির্মিত ভবনেই করোনা আক্রান্তদের জন্য ৫০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট ছাড়াও থাকছে ৫০ জনের হাইফ্লো অক্সিজেন সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে। কার্ডিওলজি ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞসহ ১৪ জন ডাক্তার, নার্স, টেকনোলজিস্ট থেকে আয়াসহ মোট ১২৩ জনের নিয়োগ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।
দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতেই গিয়ে ইতোমধ্যে ৫ বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন শতাধিক। এই অবস্থায় কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা এবং নিরবচ্ছিন্ন স্বাস্থ্য সেবা দিতে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে এই ইউনিট তৈরির কাজ চলছে। আগামী ১৮ জুনের মধ্যে নতুন এই ইউনিটে করোনা আক্রান্ত রোগিদের সেবার লক্ষ নিয়ে দ্রুত কাজ চলছে।
জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম বলেন, অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গিয়ে আমাদের কর্মীরা প্রাণঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এরপরও কাজের ক্ষেত্রে বিন্দুমাত্র দমে যাননি সাহসী কর্মীরা। তাদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে ইতোমধ্যে অনেক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে নতুন একটি করোনা চিকিৎসা ইউনিট তৈরীর কাজ শেষের দিকে। বন্দর কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দুই সপ্তাহের মধ্যেই আমরা এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছি।
তিনি বলেন, বন্দর হাসপাতালের পাশে নতুন ভবনে শুধুমাত্র এই ইউনিটের জন্য আমার ১৩ জন ডাক্তার নিয়োগ সম্পন্ন করেছি। যাদের প্রশিক্ষণ চলবে বুধবার। আশা করছি বৃহস্পতিবারের মধ্যে সবকিছু সম্পন্ন করে রোগী ভর্তি করাতে পারবো। করোনা সংক্রমণ চলাকালীন সময়ের জন্য বন্দর কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পোষ্যদের জন্য এই ইউনিট চালু হচ্ছে।
সরকারের যুগ্ম সচিব জাফর আলম বলেন, নতুন ইউনিটে আইসোলেশনে ৫০ রোগী থাকা-খাওয়া এবং ওষুধ বন্দরের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে। আইসোলেশনের পাশে রাখা হয়েছে হাইফ্লো অক্সিজেন শাখা। যেখানে ৫০ জন রোগী হাইফ্লো অক্সিজেন সুবিধা পাবেন। এই শাখার জন্য ৪টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, ৬টি ক্যানেলোসহ যাবতীয় চিকিৎসা সামগ্রী আমরা যুক্ত করতে পেরেছি। পরবতী ধাপে আমরা ১৬টি আইসিইউ শয্যা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কিন্তু আইসিইউর জন্য বিশেষায়িত ডাক্তার এবং জনবল পাচ্ছি না।
এদিকে করোনা ইউনিটে বন্দর কর্মীদের চিকিৎসার জন্য ৪টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর, চারটি ভেন্টিলেটর, নেবুলাইজারসহ চিকিৎসা সরঞ্জাম দিয়েছে বন্দরের টার্মিনাল অপারেটর সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার রুহুল আমিন। যিনি চট্টগ্রাম চেম্বারের সহ-সভাপতিও। তিনি বলেন, যেই কর্মীরা জীবন ঝুঁকি নিয়ে দেশের পণ্য উঠানামা নিরবচ্ছিন্ন রেখেছেন তাদের পাশে থেকে এবং স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান কাজ। আগামীতেও আমি তাদের পাশে থাকবো।
লাইট নিউজ