চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনায় সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। জাতীয় স্টাবিলিটির জন্য সবার মধ্যে একটি জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন তিনি।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির প্রতিনিধি দলের বৈঠকে এই আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম।
প্রেস সেক্রেটারি বলেন, জাতীয় স্টাবিলিটির জন্য সবার মধ্যে একটি জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। হিন্দু, মুসলমান, ছাত্র, শ্রমিক, জনতা সবাইকে নিয়ে জাতীয় ঐক্যের কথা বলেছেন তিনি। তিনি সবাইকে শান্ত হতে বলেছেন।
রয়টার্সে ভুল নিউজ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে যা যা করার তাই করেছি। চট্টগ্রামের ইস্যুতে সবাইকে শান্ত থাকতে বলেছেন। ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে ছয়জন সরাসরি হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। ২১ জন পুলিশের কাজে বাধা ও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছিল।
প্রেস সচিব জানান, সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যাকাণ্ডে যে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা অওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের সদস্য। তারা ককটেলসহ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়েছে।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকেও জাতীয় ঐক্যের কথা বলা হয়েছে। বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিকদের বলেন, প্রধান উপদেষ্টা তার পরিষদ নিয়ে অতিদ্রুত এই বিষয়গুলোর শান্তিপূর্ণ সমাধানের ব্যবস্থা করবেন এবং দেশে যেন কোনো রকম অবস্থার সৃষ্টি না হয়, যাতে বিভাজন সৃষ্টি হবে। আমরা
বলে এসেছি, এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন জাতীয় ঐক্য। আমাদের সামনে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এগুলোকে মোকাবিলার জন্য আমাদের, বিশেষ করে যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায় অথবা স্ট্যাবিলি যারা নষ্ট করতে চায়, তাদের প্রতিহত করার জন্য আমাদের অবশ্যই জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে বলেছি।
এর আগে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপির পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন দলটির মহাসচিব মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন— বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহউদ্দিন আহমেদ।
বৈঠকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, হাসান আরিফ ও মাহফুজ আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করে ডিএমপির গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক
কাজী শরীফুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হলে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
ওই দিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সঙ্গে সংঘর্ষের সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) নিহত হন। তিনি সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) হিসেবে কর্মরত ছিলেন।