সম্প্রতি উচ্চ আদালতের একটি রায়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ডিগ্রি কলেজগুলোতে গভর্নিং বডির সভাপতি পদ থেকে সংসদ সদস্যদের বাদ দেওয়া হয়েছে। এটা সংসদ সদস্যদের জন্য অসম্মানজনক বলে দাবি করেছেন তারা। এনিয়ে সংসদে একাধিক সংসদ সদস্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সংসদ অধিবেশনে হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল পাস হওয়ার আগে বিলটির ওপর জনমত যাচাই-বাছাই করার প্রস্তাবের ওপর আলোচনাকালে এসব কথা বলেন তারা। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান।
উচ্চ আদালতের রায়ের কথা উল্লেখ করে পীর ফজলুর রহমান বলেন, আদালতের একটি রায়ে ডিগ্রি কলেজে সংসদ-সদস্যদেরকে সভাপতির দায়িত্ব থেকে বাদ দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে এবং উচ্চ আদালতের আদেশ আপিলের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রজ্ঞাপন দিয়েছে।
তিনি বলেন, এর আগে একটি মামলাকে কেন্দ্র করে এইচএসসি লেভেলের গভর্নিং বোর্ডের সভাপতির পদ থেকে সংসদ সদস্যদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালত সম্প্রতি রায়ের মাধ্যমে ডিগ্রি কলেজ থেকে সংসদ সদস্যদেরকে সভাপতি পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, এমপিদের সভাপতি হিসেবে যারা নিয়োগ দেন তারা পদমর্যাদায় এমপিদের নিচে হওয়ায় সঠিক হয়নি। সেক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সেটিকে যদি সংসদের ওপরের পদমর্যাদায় শিক্ষামন্ত্রী সংসদ সদস্যদের সভাপতি পদের নিয়োগদান করেন তাহলে তো এই রায়ের আর কোনো কার্যকারিতা থাকে না।
তিনি আরও বলেন, কোনো কলেজ পরিচালনায় কোনো সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে যদি অনিয়ম থাকে সেটি তার ব্যক্তিগত দায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারি আমার এলাকায় একটি কলেজ সরকারি করণের সময় আমি অর্ধ লাখ টাকা ক্যাশ রেখে আসছি। অনেক সংসদ সদস্য ব্যক্তিগত অর্থে কলেজ করে পরিচালনা করে আসছেন। তাই শিক্ষামন্ত্রী এবং আইনমন্ত্রীকে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। যেটি হয়েছে সেটি অনেকাংশেই সংসদ সদস্যদের অসম্মানজনক অবস্থায় নিয়ে গেছে।
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য কাঠামো তৈরি করেছেন, সেখানে দুজন অভিভাবক নির্বাচিত করার সুযোগ আছে। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক এবং ডিগ্রি পর্যায়ে এটার কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই। এই ক্ষেত্রে অতিদ্রুত একটি ব্যবস্থা করা দরকার।
জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারি বলেন, হাইকোর্টের অসংখ্য রায় দেখি টেবিলের এক কোণায় পরে থাকে। বছরের পর বছর বাস্তবায়ন হয় না। কনটেম্পট করতে হয় সরকারি কর্মকর্তাকে কোর্টে ডেকে এনে তারপর বাস্তবায়ন করতে হয়। সেখানে ৩৫০ এমপিকে অ্যাটাক করে একটা রায় হলো এমপিরা সভাপতি হতে পারবে না। সেই রায় ১০ দিনের মধ্যে বাস্তবায়ন হয়ে গেল, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় চিঠি দিয়ে দিল। এমনকি আপিলের সময়সীমা ৬০ দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করল না। যেটা অনৈতিক।
লাইটনিউজ