শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:২৮ অপরাহ্ন

তিন জিম্মির বিনিময়ে ৯০ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিল ইসরায়েল

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২০ জানুয়ারী, ২০২৫

দখলদার ইসরায়েলের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন ৯০ ফিলিস্তিনি। হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে এসব ফিলিস্তিনিকে কারাগার থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।এর আগে ইসরায়েলি তিন জিম্মিকে ছেড়ে দেয় হামাস।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের প্রথমদিনে তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেয় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তাদের রেডক্রসের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাদের ইসরায়েলে নিয়ে যাওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চুক্তির অংশ হিসেবে ৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয় তেলআবিব। চুক্তির আওতায় একজন ইসরায়েলি জিম্মির মুক্তির বিনিময়ে ৩০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে ছেড়ে দেবে নেতানিয়াহু প্রশাসন। মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দিদের প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য খান ইউনিস হাসপাতালে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

হামাস জানিয়েছে, ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া ফিলিস্তিনিদের মধ্যে পশ্চিম তীর এবং জেরুজালেমের ৬৯ নারী এবং ২১ কিশোর রয়েছে।

গতকাল রোববার যুদ্ধবিরতি শুরু হয় ঘণ্টা তিনেক বিলম্বে। স্থানীয় সময় বেলা সোয়া ১১টায়। যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। গাজায় বন্দী যেসব জিম্মিকে হামাস মুক্তি দেবে, তাদের নাম হস্তান্তর করা হয়নি—এমন অভিযোগ এনে যুদ্ধবিরতির সময় পিছিয়ে দেয় ইসরায়েল। এর আগমুহূর্ত পর্যন্ত উপত্যকাটিতে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে গেছে তারা।

দেরিতে যুদ্ধবিরতি শুরু হলেও গাজাবাসী আনন্দ উদ্‌যাপন শুরু করতে দেরি করেননি। শোনা যায় আতশবাজি পোড়ানো ও পটকা ফোটানোর শব্দ। সকাল থেকেই গাজায় নিজ নিজ এলাকায় ফেরা শুরু করেন লোকজন।

গাজায় যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার মধ্য দিয়ে। ওই হামলায় ১ হাজার ২০০ জনের বেশি নিহত হন। জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় প্রায় আড়াই শ জনকে। এখনো হামাসের হাতে জীবিত বা মৃত প্রায় ১০০ জন জিম্মি রয়েছেন বলে ধারণা করা হয়। সেদিন থেকেই গাজায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এতে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৭ হাজার মানুষ।

এরপর থেকে যুদ্ধবিরতির বহু চেষ্টা হলেও আশার আলো দেখা যায়নি। তবু যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসরের মধ্যস্থতায় চলছিল সমঝোতার প্রচেষ্টা। এরই মধ্যে ১৫ জানুয়ারি কাতারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দোহায় আলোচনার পর যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন হামাস ও ইসরায়েলের প্রতিনিধিরা।

গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলকে এককাট্টা সমর্থন দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাও কম করেনি। এ নিয়ে তৎপর ছিলেন নতুন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। বিদায়ের আগের দিন এক ভাষণে বাইডেন বলেন, ‘আজ গাজায় বন্দুকের শব্দ থেমে গেছে। আমার অংশ নেওয়া সবচেয়ে কঠিন আলোচনাগুলোর একটি ছিল এটি।’

ইসরায়েল ও হামাসের যুদ্ধবিরতির চুক্তি অনুযায়ী, যুদ্ধবিরতি হবে তিন ধাপে। প্রথম ধাপের ছয় সপ্তাহে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে হামাস। এর বিনিময়ে নির্দিষ্ট সংখ্যক ফিলিস্তিনি বন্দী মুক্তি পাবেন ইসরায়েলের কারাগার থেকে। গাজায় ত্রাণ সরবরাহ বাড়ানো হবে

এবং ইসরায়েলি সেনাদের একাংশকে গাজা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপে বাকি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া হবে এবং স্থায়ীভাবে যুদ্ধবিরতি শুরু হবে।

তবে যুদ্ধবিরতির প্রথম ছয় থেকে সাত সপ্তাহ সময়টা কঠিন হবে বলে মনে করেন গবেষণাপ্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউসের বিশেষজ্ঞ ইয়োসি মেকেলবার্গ। তিনি বলেন, এই যুদ্ধ থামানোর কোনো ইচ্ছা নেই ইসরায়েলের বর্তমান সরকারের। তাদের সম্পূর্ণ ভিন্ন একটি এজেন্ডা রয়েছে। সেই এজেন্ডা হলো তারা গাজা দখল করতে চায়, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দিতে চায়।

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD