পর্যটকশূন্য হয়ে পড়েছে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা। এতে বেকার হয়ে পড়েছে ১৬ পেশার পাঁচ হাজারের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারী। দোকান খুলে বসে থাকলেও ক্রেতা নেই।
বুধবার (২৪ জুলাই) সকালে সৈকতের জিরো পয়েন্ট, চৌরাস্তা, গঙ্গামতি, লেম্বুরবন, ইলিশ পার্ক, শুঁটকি মার্কেট, ব্লক পয়েন্ট ঘুরে দেখা যায়, পর্যটকশূন্য প্রতিটি স্পট। জিরো পয়েন্ট এলাকায় দেখা যায়, বেশ কয়েকজন দোকান খোলা রেখে রাস্তায় ক্রিকেট খেলছেন।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অস্থিতিশীল এ পরিবেশে কুয়াকাটায় পর্যটক আসছে না। গত কয়েকদিনে একেবারে পর্যটকশূন্য হয়ে পড়ায় বেকার সময় পার করছেন তারা। হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন গত এক সপ্তাহে কোটি টাকা লোকসান হয়েছে। তবে এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে।
কুয়াকাটার হোটেল সি-ক্রাউনের পরিচালক মো. সাজিদ বলেন, আমরা ২০ জন কর্মচারী, বিদ্যুৎ বিল ও অন্যান্য খরচসহ দৈনিক প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আমার হোটেলে ৬৪টি রুম রয়েছে। প্রতি বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবারের জন্য ৪-৫ দিন আগে বুকিং হয়ে যেত প্রায় ৭০ শতাংশ রুম। গত এক সপ্তাহে পুরোপুরি ফাঁকা আরও কতদিন লাগবে তা নিয়ে আমরা দুশ্চিতায় রয়েছি।
কুয়াকাটা হোটেল-মোটেল এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইব্রাহিম ওয়াহিদ বলেন, কুয়াকাটায় থাকা প্রায় ২০০টির বেশি আবাসিক হোটেল রয়েছে গড়ে তৃতীয় ও দ্বিতীয় শ্রেণির প্রতিটি হোটেলগুলোতে সপ্তাহে লাখ টাকার ওপরে ক্ষতি হয়েছে। যা সামগ্রিকভাবে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতির মুখে হোটেল মালিকরা।
কুয়াকাটা ট্যুর গাইড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কেএম বাচ্চু বলেন, আমরা মূলত ট্যুর অপারেটর ও ঢাকার বিভিন্ন এজেন্সির পাঠানো পর্যটকদের গাইড করে থাকি। গত এক সপ্তাহ যাবত আমাদের প্রায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৫০ জন গাইড বেকার সময় কাটাচ্ছে। সামনে আরও কতদিন থাকতে হবে সেটাও অনিশ্চিত।
কুয়াকাটা ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন, দেশের পরিস্থিতির সঙ্গে কুয়াকাটার সার্বিক বিষয় সবসময় সম্পর্কিত। বড় ধাক্কা লেগে গেল পর্যটন খাতে। বর্তমানে পর্যটক শূন্যের কোঠায়। মৌসুমের শুরুতে সব পর্যটন ব্যবসায়ী তাদের মোটা অংকের একটি বিনিয়োগ নিয়ে বসে কিন্তু এখনতো তাদের মাথায় হাত। কুয়াকাটাতে ১৬টি পেশায় সরাসরি পাঁচ হাজার লোক পর্যটন সেবায় জড়িত। এ সংকটের সমাধান না হলে একদিকে বেকারত্ব এবং সরকারের একটি বড় আর্থিক ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ বলেন, কয়েকদিন আটকে থাকা পর্যটকদের আমরা সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে নিজ গন্তব্যে পাঠাতে পেরেছি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায়। এখনও সার্বিক খোঁজ খবর রাখছি।