সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে সবধরনের চালের। কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বেশি রেখে বিক্রি করা হচ্ছে চাল। একইসঙ্গে দাম বেড়েছে খোলা ভোজ্যতেল ও চিনির। লিটারে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম বেশি রাখা হচ্ছে খোলা সয়াবিনে।
তবে দাম অপরিবর্তিত আছে সবজির। আগের বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে সবধরনের সবজি। একইভাগে দাম অপরিবর্তিত মাছ, মাংস, মুরগি, ডিম, ডাল ও গরম মসলার।
শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, ফকিরাপুল, কমলাপুর, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি কাঁচা বাজার, খিলগাঁও ও মালিবাগ বাজার ঘুরে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
এসব বাজারে দাম বেড়ে বর্তমানে খুচরায় প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, পায়জাম চাল ৪৮ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৮ টাকা, জিরা মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৫৫ টাকা ও পোলাও’র চাল (খোলা) বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজিদরে।
অথচ এক সপ্তাহ আগে প্রতিকেজি আটাশ চাল বিক্রি হয়েছিল ৪৬ টাকা, পায়জাম চাল ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা, মিনিকেট চাল ৫৫ টাকা, জিরা মিনিকেট চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৫২ টাকা ও পোলাও’র চাল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজিদরে।
এদিকে চালের দাম বাড়ার জন্য মিলারদের দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। আর ক্রেতারা বলছেন, বাজারে একটা পণ্যের দাম বাড়লে বিক্রেতারা অন্যটিরও দাম বাড়িয়ে দেন।
.এ বিষয়ে আমজাদ নামে শান্তিনগর বাজারের এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখন অন্য সব কিছুর দাম বাড়ার প্রতিযোগিতা চলছে। বাজারে চালের ঘাটতি নেই অথচ কেজিতে পাঁচ টাকা বাড়িয়েছে ব্যবসায়ীমহল। এর যৌক্তকতা কী আছে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।
তার সঙ্গে একমত নন সেলিম রাইচ এজেন্সির মালিক সেলিম। তিনি বলেন, মিলাররা প্রতিবস্তায় চালের দাম বাড়িয়েছে। তাদের কাছ থেকে বেশি দামে চাল কেনায় দাম বাড়তি রয়েছে। তারা দাম কমালে সব বাজারে কমে আসবে চালের দাম।
দাম বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেল ও চিনির। লিটারে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম বেড়ে বর্তমানে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০২ টাকা। কেজিতে তিন টাকা বেড়ে চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৫ টাকা।
অপরিবর্তিত আছে সবজি ও শাকের বাজার। এসব বাজারে প্রতিকেজি বরবটি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা, করলা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, উস্তা ৮০ টাকা, হাইব্রিড শসা ৫০ টাকা, শসা (দেশি) ৮০ টাকা, গাজর (আমদানি) ৮০ থেকে ৯০ টাকা, মানভেদে ঝিঙা-ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চিচিঙা ৫০ টাকা, কাকরোল আকারভেদে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ থেকে ৬০ টাকা, পটল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বেগুন আকারভেদে ৬০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, কচুর ছড়া ৫০ থেকে ৬০ টাকা, আলু ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, কচুর লতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, কাঁচকলা প্রতিহালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতিপিস ৩০ থেকে ৩৫ টাকা।
বাজারে প্রতিআঁটি (মোড়া) লাল শাক বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকা, মুলা ও কলমি শাক ১০ থেকে ১২ টাকা, পুঁই শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, ডাটা শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, লাউ ও কুমড়ার শাক বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪৯ টাকায়।
এসব বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা, অ্যাংকর ডাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, দেশি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা কেজিদরে।
অপরিবর্তিত (আগের দাম) আছে মাছ, মুরগি, ডিম, গরু ও খাসির মাংসের দাম। এসব বাজারে বর্তমানে সোয়া কেজি থেকে দেড় কেজি ওজনের ইলিশের কেজি চাওয়া হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা, এক কেজি ওজনের ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ৫৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকা। এছাড়া ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিদরে বিক্রি করা হচ্ছে।
এসব বাজারে প্রতিকেজি রুই (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মৃগেল ১৬০ থেকে ২৮০ টাকা, পাঙাস ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কাতল (আকারভেদে) ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, পাবদা ২৮০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, মলা ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি টেংরা ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, নদীর টেংরা (বড়) ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৮০ টাকা, দেশি শিং ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, বাইলা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে প্রতিডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকা, সোনালি মুরগির ডিম ১৪০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকার মধ্যে।
প্রতিকেজি বয়লার বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২২০ টাকা কেজিদরে। তবে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজিদরে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৫৭০ টাকা কেজিদরে।
আগের দামে বিক্রি হচ্ছে গরু ও খাসির মাংস। এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, খাসির মাংস ৭৫০ টাকা ও বকরির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজিদরে।
লাইটনিউজ/এসআই