শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:১৭ পূর্বাহ্ন

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ১০০ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪

বাংলাদেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের একমাত্র চারদেশিয় (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভূটান) বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ১০০ মেট্রিক টন আতপ চাল আমদানি হয়েছে।

বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে ভারত থেকে ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানির তথ্যটি নিশ্চিত করেন বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ।

আবুল কালাম আজাদ জানান, মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) স্থলবন্দরে ভারত থেকে ৪টি পণ্যবাহী ট্রাকে ১০০ মেট্রিক টন আতপ চাল এসেছে। চালগুলো আমদানি করেছেন আল আমিন এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে পহর ইন্টারন্যাশনাল নামের একটি প্রতিষ্ঠান। তিনি আরো জানান, সাধারণত আমাদের এ
বন্দরটিতে চাল আমদানি হয় না, তবে সরকার অনুমতি দিলে কখনো কখনো চাল আমদানি করা হয়। এর আগে প্রায় দুই বছর আগে চাল আমদানি হয়েছিল। বিশেষ করে এ বন্দর দিয়ে বেশিরভাগ পাথর আমদানি হয়ে থাকে।

স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, ভৌগোলিক অবস্থান ও কৌশলগত কারণে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি চারদেশিয় স্থলবন্দর। ১৯৯৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর নেপালের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য কার্যক্রম শুরুর মাধ্যমে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি চালু হয়। এরপর ২০১১ সালের ২২
জানুয়ারি ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি এই বন্দর দিয়ে ভারতে যাত্রী পারাপার শুরু হয় এবং ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ভুটানের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রফতানি কার্যক্রম শুরু হয়।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি দিয়ে প্রায় ৯৮ শতাংশ পাথর আমদানি হয়ে থাকে। পাথর ছাড়াও এ বন্দর দিয়ে মসুর ডাল, গম, ভুট্টা, চিরতা, হাজমলা, যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিকদানা, রেললাইনের স্লিপার, খইল, আদা এবং চিটাগুড় আমদানি করা হয়। এছাড়া এ বন্দর দিয়ে ভারত ও নেপালে পাট, ওষুধ, প্রাণ ও ওয়ালটনের পণ্য, জুস, মোটরসাইকেল, ব্যাটারি সহ নানা ধরনের পণ্য রফতানি করা হচ্ছে।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান, চারদেশিয় স্থলবন্দর হিসেবে এ স্থলবন্দরটির গুরুত্ব অপরিসীম। বেশ কয়েকবার চাল আমদানি হয়েছে, তবে মাঝখানে কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর আবার চাল আমদানি শুরু হয়েছে। তারা মনে করেন, যদি চালের পাশাপাশি বন্দর সংশ্লিষ্ট দেশগুলো থেকে ফলমূল ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য আমদানি করা যায়, তাহলে খাদ্যপণ্যের দাম কমবে।

বাংলাবান্ধা লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আক্তারুল হক বলেন, ‘আমরা পাথর আমদানি করার পাশাপাশি এখন এ বন্দর দিয়ে চুন, মসুর ডাল, গম, ভুট্টা, চিরতা, হাজমলা, যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিকদানা, রেললাইনের স্লিপার, খইল, আদা এবং চিটাগুড় আমদানি করছি। যদি খাদ্য
সামগ্রী আমদানি করা যায়, তাহলে আমাদের দেশে ভোগ্যপণ্যের দাম কমে যাবে।’

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে আল আমিন এন্টারপ্রাইজের পহর ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। বিশেষ করে দূরত্বের কারণে এ স্থলবন্দর দিয়ে চাল আমদানি ব্যয়বহুল হয়ে
থাকে, যার ফলে অনেক কম পরিমাণে চাল আমদানি করা হয়। তবে আমরা ভারতের এক্সপোর্টারদের সাথে কথা বলেছি যাতে তারা পণ্যের দাম কম রাখেন, যাতে আমদানিকারকরা লাভজনকভাবে পণ্য আমদানি করতে পারে।’

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রফতানি কারক গ্রুপের আহ্বায়ক রেজাউল করিম শাহিন বলেন, ‘ভৌগোলিক অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরটি দিয়ে ১০০ মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে। এ পোর্ট দিয়ে আরও কিছু আমদানি
করা যায়, সে বিষয়ে আমাদের ব্যবসায়ীদের সাথে আলোচনা করছি।’

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উজ্জল হোসেন বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে ১০০ মেট্রিক টন ভারতীয় আতপ চাল আমদানি করা হয়েছে। চালগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে। এভাবে নিয়মিত চালসহ অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী
আমদানি করা হলে, আমাদের দেশে ভোগ্যপণ্যের দাম কমবে বলে মনে হচ্ছে।’

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD