বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫, ০৩:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ডিসেম্বরে নির্বাচনের কথা বললেও জুনে চলে যায় কীভাবে, প্রশ্ন রিজভীর ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণের মেয়র ঘোষণা সিঙ্গাপুর-যুক্তরাজ্য থেকে আসবে ২ কার্গো এলএনজি, ব্যয় ১৩৬৬ কোটি রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এশীয় নেতাদের এগিয়ে আসার আহ্বান ড. ইউনূসের ২০২৬ বিশ্বকাপে মেসির খেলা নিয়ে যা জানালেন আর্জেন্টাইন কোচ মহাসড়কে অটোরিকশা উঠলেই ব্যবস্থা, ছিনতাইয়ে জিরো টলারেন্স ঈদের ছুটিতে ঢাকাবাসী নিরাপদ থাকবেন: স্বরাষ্ট্র সচিব গাজায় হঠাৎ হামাসের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিক্ষোভ শফিক রেহমানকে যায়যায়দিনের ডিক্লারেশন দেওয়া কেন অবৈধ নয় : হাইকোর্ট বাংলাদেশে কারখানা স্থানান্তরে সহায়তা করবে চীনা এক্সিম ব্যাংক

বাজারে ক্রেতাদের ভিড়, দাম চড়া

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০

রমজান এলেই সাধারণ মানুষের মধ্যে একটু বেশি পরিমাণে নিত্যপণ্য কেনার প্রবণতা দেখা যায়। তবে এবার করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে গত ২৫ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে জনগণকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছে। এরই মধ্যে শনিবার (২৫ এপ্রিল) শুরু হচ্ছে রমজান। অন্য বছরের তুলনায় এ রমজানে কাঁচাবাজারে ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা কম হলেও গত কয়েকদিনের তুলায় বেশ ভিড় বেড়েছে।

জনগণকে নিত্যপণ্য বিশেষ করে ইফতার সামগ্রী বেশি পরিমাণে কিনতে দেখা গেছে। তাই বাড়তি চাহিদা থাকায় বেশ বেড়েছে ইফতার সামগ্রীসহ মুরগি ও সবজির দাম। প্রতি হালি লেবুর দাম উঠেছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে সব ধরনের ডালের দাম। ডিম ও গরুর মাংস আগের দামেই বিক্রি হতে দেখা গেছে।

শুক্রবার রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার সালেক গার্ডেন কাঁচাবাজার, ট্যানারি মোড় কাঁচাবাজার, রায়েরবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

শনিবার রোজা, তাই পরিবারের জন্য ট্যানারি মোড় কাঁচাবাজারে বাজার করতে আসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সনাতনগড় এলাকার বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম শুভ। বেশি করে পণ্য কেনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘গত ২৫ মার্চ থেকে স্কুল, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব অফিস আদালত বন্ধ। করোনার আতঙ্কে বাইরেও বের হওয়া যাচ্ছে না। এরই মধ্যে আগামীকাল থেকে শুরু হচ্ছে রোজা। এছাড়া লকডাউন পরিস্থিতিতে রোজা রাখা অবস্থায় বারবার বাজারে আসা সম্ভব নয়। তাই যেসব পণ্য পচনশীল নয় সেসব পণ্য একটু বেশি করে কিনে রাখছি।

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় কিছুদিন থেকে পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচাবাজারসহ নিত্যপণ্য আমি কিনি। তবে করোনার মধ্যেও গত কয়েকদিন সবজিসহ অন্য পণ্যে দাম বেশ কম ছিল। গত এক সপ্তাহ থেকেই কিছু কিছু পণ্যে দাম বাড়তির দিকে। আজকেও মুরগি, ডালসহ সবজির দাম বেশ কিছুটা বেড়েছে।’

বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বড় দানার মসুরের ডাল গত সপ্তাহের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার এ ডাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৯০-১০০ টাকা। গত সপ্তাহে যা ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। মাঝারি দানার মসুর ডাল আজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়; গত সপ্তাহে যা ছিল ৮০ থেকে ৯৫ টাকা। এছাড়া ছোট দানার মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৪০ টাকায়; গত সপ্তাহে যা ছিল ১২৫ থেকে ১৩০ টাকা। তবে মুগ ডাল আগের দামেই তথা ১৩০ থেকে ১৪৮ টাকায় এবং অ্যাংকর ডাল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

চিনির দাম প্রতি কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়েছে। শুক্রবার প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল ৬৫ থেকে ৭৫ টাকা। পেঁয়াজের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গত সপ্তাহে যা ছিল ৫০ থেক ৬০ টাকা। আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। শুক্রবার চিনের আদা প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হতে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। এছাড়া দেশি আদা ২৩০ টাকা থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ২২০ থেকে ২৫০ টাকা।

এসব পণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সালেক গার্ডেন বাজারের জননী স্টোরের মালিক আব্দুল মালেক বলেন, ‘চায়না আদার চাহিদা বেশি। কিন্তু বাজারে এর সরবরাহ কম তাই দামও বেশি। পাইকারি বাজার থেকে বেশি দাম দিয়ে কিনে এনে তারা বেশি দামেই বিক্রি করছেন। এছাড়া অন্যান্য পণ্যের দাম কিছুটা বেশি। প্রতিবারই রমজানকে কেন্দ্র করে এসব পণ্যের দাম বাড়ে। এবারও তুলনামূলক কম হলেও দাম বেড়েছে।’

ধানমন্ডি জিগাতলার গাবতলা বড় মসজিদ এলাকার বাসিন্দা আকবর আহমেদ সালেক গার্ডেনে বাজার করতে আসেন। তিনি বলেন, পণ্যের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। প্রতিটি পণ্যের প্রচুর পরিমাণ রয়েছে। তারপরও রোজাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। দাম নিয়ন্ত্রণে কঠোর মনিটর চান তিনি।

এদিকে গত সপ্তাহের আকারভেদে প্রতি হালি ১৫ থেকে ২৫ টাকার লেবু শুক্রবার বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ টাকায়। ২০ টাকা প্রতি কেজি বিক্রি হওয়া গাজরের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৫-৪০ টাকা। ২০ থেকে ২৫ টাকা প্রতি কেজি শসার দাম বেড়ে হয়েছে ৩০ থেকে ৪৮ টাকা। ২০-৩০ টাকার বেগুনের দাম বেড়ে হয়েছে ৪০-৫০ টাকা।

গত কয়েক সপ্তাহের মতো এখনো বাজারে সব থেকে দামি সবজি সজনে ডাটা। বাজারভেদে সজনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০-১২০ টাকা, যা গত সপ্তাহে কোথাও কোথাও ৬০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছিল। দাম বাড়ার এ তালিকায় রয়েছে পাকা টমেটোও। গত সপ্তাহে ১০-১৫ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাকা টমেটো এখন ২০ টাকার নিচে পাওয়া যাচ্ছে না।

রোজার আগে বেশকিছু সবজির দাম বাড়লেও করলা, পেঁপে, বরবটি, ঝিঙা, চিচিংগার দাম আগের মতোই স্থির রয়েছে। বাজার ও মানভেদে করলার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। বরবটি পাওয়া যাচ্ছে ৪০-৫০ টাকা কেজি। পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা কেজি। এছাড়া পটল ৪০-৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০-৫০ টাকা এবং চিচিংগা ২০-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দাম বাড়ার বিষয়ে ট্যানারি মোড় কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রিতা আইনাল হোসেন বলেন, ‘কাঁচাবাজারের দাম প্রতিদিনই ওঠা-নামা করে। তবে এসব কিছুদিন থেকেই সবজির দাম তুলনামূলক অনেক অনেক। আজকে চাহিদা বেশি থাকায় দামও কিছুটা বাড়তি।’

এদিকে সবজির পাশাপাশি বেড়েছে ব্রয়লার ও দেশি মুরগির দাম। গত সপ্তাহে ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়ে ১২০-১৩০ টাকা হয়েছে। দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫০-৪০০ টাকা।

মুরগির দাম বাড়লেও অপরিবর্তিত রয়েছে ডিম এবং গরু ও খাসির মাংসের দাম। ডিমের ডজন আগের মতোই ৭৫-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের মতই গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৬০০ টাকায়। খাসির মাংসের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০-৯০০ টাকা।

লাইটনিউজ/এসআই

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD