এখন চারিদিকের যা অবস্থা, তাতে কারো কোন রোগ হওয়া বা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে যাবার অর্থ নির্ঘাত ‘করোনা’ কেস। সেই রোগীর যদি শ্বাসকষ্ট থাকে, তাহলে ধরেই নেয়া হয় করোনা হয়েছে।
আর তাতে প্রকৃত রোগীর কষ্ট বেড়েছে। তিনি সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। আর পেলেও এ হাসপাতাল, ও হাসপাতাল ঘুরতে ঘুরতে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। এতে রোগীর পরিবার পরিজন পড়ছেন ঘোর বিপাকে। কি করবেন, কোথায় যাবেন, কোন হাসপাতালে গেলে প্রকৃত চিকিৎসা পাবেন? রাজ্যের হয়রানি।
এমনই এক বিপদে পড়েছিলেন জাতীয় দলের ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব। গতকাল দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাবাকে নিয়ে অন্তত পাঁচটি হাসপাতালে ঘুরেন তিনি। কেউই ভর্তি নিতে রাজি হননি। শেষতক মিরপুর ২ নম্বর রোডে হার্ট ফাউন্ডেশনে অসুস্থ পিতাকে ভর্তি করাতে পেরেছেন এই লেগস্পিনার।
অনেক হাসপাতালে চেষ্টা করেও হয়নি। হতাশ নিয়ে যখন খিলগাঁওয়ে নিজ বাসায় ফিরে যাচ্ছিলেন, তখন ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবালের সহযোগিতায় হার্ট ফাউন্ডেশনে তার পিতাকে হাসাপাতালের সিট ব্যবস্থা করে দিতে পেয়েছেন।
আসলে তার বাবার সমস্যা কি? এখন কেমন আছেন? আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে জাগো নিউজের সাথে আলাপে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব বলেন, ‘আব্বা আল্লাহর রহমতে এখন একটু ভালো। গতকালের চেয়ে শ্বাসকষ্ট কমেছে অনেকটাই।’
বিপ্লব জানান, তার বাবা মূলত হার্টের রোগী। আগেও শ্বাসকষ্ট ছিল। এখনও শ্বাসকষ্টেই ভুগছিলেন। আর শ্বাসকষ্টের কারণেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। কিন্তু যে হাসপাতালেই নেয়া হয়,সেখানেই আগে করোনা টেস্ট করিয়ে রিপোর্ট দেখে তারপর ভর্তি করার কথা বলেছে।
জাতীয় দলের এই লেগস্পিনার বলেন, ‘আমরা অনেক কষ্ট করে তারপর হার্ট ফাউন্ডেশনে যাই, আব্বা আগে থেকেই হার্টের রোগী। তার আগের বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার রিপোর্টও তাই বলে দিচ্ছিল। তাই হার্ট ফাউন্ডেশনে ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাবার পর কর্তব্যরত চিকিৎসকরা দেখেই মোটামুটি ধরতে পারেন- সম্ভবত করোনা নয়, হৃদরোগের সমস্যা। কিন্তু কিছুতেই সিট পাওয়া যাচ্ছিল না। সিট খালিও ছিল না। আমাদের তখন রীতিমত কিংকর্তব্যবিমুঢ় অবস্থা। কি করবো, কাকে বলবো সাত পাঁচ ভেবে আমাদের ম্যানেজার সাব্বির ভাই (সাব্বির খান) ও তামিম ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করি। তামিম ভাই ডাক্তারের সাথে কথা বলে সিটের ব্যবস্থা করে দেন। তারপরও বর্তমান স্বাস্থ্যবিধি মেনে করোনা টেস্ট করানো হয়েছে। চিকিৎসকরা তাকে আপাতত আইসোলেশনে রেখেছেন ‘
বিপ্লব যোগ করেন, ‘আমাদের জানানো হয়েছে তার করোনা রিপোর্ট আসার পর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা। করোনা টেস্ট নেগেটিভ আসলে আব্বার সত্যিকার হার্টের সমস্যার চিকিৎসা শুরু হবে। তার আগে তিনি পর্যবেক্ষণেই থাকবেন। তবে কাল বুধবার সন্ধ্যার পর আব্বাকে যখন হার্ট ফাউন্ডেশনে নিয়ে আসা হয়, আল্লাহর রহমতে এখন তার চেয়ে ভালো আছেন।’