রংপুরে আম গাছে থোকায় থোকায় সোনালী মুকুল শোভা পাচ্ছে। চারদিকে ছড়িয়ে পড়া মুকুলের ঘ্রাণ প্রকৃতিপ্রেমীদের মুগ্ধ করছে। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গাছে গাছে। ছোট পাখিরাও মুকুলে বসেছে মনের আনন্দে।
হাড়িভাঙা আমের প্রসিদ্ধ অঞ্চল রংপুরের মিটাপুকুরের খোড়াগাছ, পদাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নসহ রংপুরের ৬ হাজার ৫০০ আম চাষি স্বপ্ন দেখছে। ভালো ফল পেতে বাগান চাষিরা ব্যস্ত গাছের পরিচর্যায়। কৃষি বিভাগ বলছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার ভালো ফলনে রেকর্ড হবে।
জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে হাড়িভাঙা আমের চাষ হয়েছে ১৯ শত ৫ হেক্টর জমিতে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৯ হাজার ৭১০ মেট্রিক টন। গতবারের চেয়ে আম চাষে ১৮ হেক্টর জমি যুক্ত হয়েছে।
কৃষি বিভাগ আরও জানায়, জেলায় বছরজুড়ে নিয়মিত পরিচর্যা, গাছের গোড়ায় বাঁধ দিয়ে পানি সেচের ফলে গাছ নিয়মিত খাদ্য পাচ্ছে। এতে পরিশ্রমের ফলও মিলছে। গাছে গাছে ব্যাপক মুকুল আসায় ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানান রংপুর কৃষি বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (০২ মার্চ) রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াছ, পদাগঞ্জ ও আখিরারহাট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে সোনালী মুকুলের সুমিষ্ট ঘ্রাণে চারিদিকে মৌ-মৌ করছে। এলাকার বাগান ছাড়াও রাস্তা-ঘাট, বাড়ির চারপাশের একইচিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
এলাকা ঘুরে কথা হয় আম চাষি ফুল বাবুর সঙ্গে। বাবু বলেন, নিজের আড়াই একর একর আমের বাগানে মুকুল দেখে বুকটা ভরে গেছে। মুকুলে পোকামাকড়ের আচড় যাতে না লাগে, সেজন্য প্রথম দফায় আলাদা করে কীটনাশক ও ভিটামিন ওষুধ প্রয়োগ করা হয়েছে। শেষ পর্যন্ত যদি ফলন ভালো হলে এবং ভালো দাম পেলে বছরজুড়ে সংসারের খরচ বহন সম্ভব হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (উদ্যান) কৃষিবিদ শামীমুর রহমান জানান, এবার জেলায় ৩ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে সব জাতের আম চাষ হয়েছে। যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি। এর মধ্যে হাড়িভাঙা জাতের আম চাষ হয়েছে ১৯ শত ০৫ হেক্টরে, যার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার মেট্রিক টন।
তিনি আরও জানান, এ সব বাগানে এখন আমের মুকুল এসেছে। গত বারের চেয়ে এবার আমের মুকুলের ছড়া বেশ বড় এবং ভালো। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।