বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) মরণঘাতী করোনাভাইরাসের নতুন হটস্পট হিসেবে দক্ষিণ আমেরিকাকে চিহ্নিত করেছে। কিন্তু বিপরীত চিত্র দেখা গেছে মহাদেশটির কিউবায়। দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলোতে যখন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে তখন এই দ্বীপরাষ্ট্রটিতে কমছে সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা।
দ্য গার্ডিয়ানের বরাতে জানা যায়, বর্তমানে কিউবায় নাগরিকদের মধ্যে সংক্রমণের মাত্রা ডমিনিকানদের তুলনায় ২৪ গুণ কম, মেক্সিকানদের তুলনায় ২৭ গুণ কম, ব্রাজিলিয়ানদের মধ্যে ৭০ গুণ কম।
পর্যটন শিল্পনির্ভর এই দেশ পার্শ্ববর্তী দেশের তুলনায় অনেক দেরিতেই নিজের সীমান্ত বন্ধ করেছে। সেইসঙ্গে কয়েক লাখ চিকিৎসক ও নার্সদের মানুষের বাড়ি বাড়ি যেয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিহ্নিত করার নির্দেশনা দিয়েছে। সেই নির্দেশনা পালন করে প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি ঘুরছেন চিকিৎসক ও নার্সরা।
যুক্তরাষ্ট্রের আমেরিকান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক উইলিয়াম লিওগ্র্যান্ড বলেন, করোনা মহামারি মোকাবেলায় বিশ্বের অন্য কোনো রাষ্ট্র এমন অভিনব পন্থা গ্রহণ করেনি। কিউবার পুরো স্বাস্থ্য খাত জনগণের সঙ্গে মিশে গেছে। মানুষও এই ব্যবস্থার কারণে তড়িৎ ব্যবস্থা পাচ্ছেন। ভাইরাসে আক্রান্তদের দ্রুত চিহ্নিত করাও সম্ভব হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা এখন জানি যে, করোনা আক্রান্ত রোগীকে যত দ্রুত চিহ্নিত করা সম্ভব হবে, সংক্রমণের মাত্রা ততই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। কিউবার স্বাস্থ্য খাত ঠিক তাই করতে সক্ষম হয়েছে।
লিজ ক্যাবলারো নামে কিউবান এক চিকিৎসক সরকারের নির্দেশনা মেনে রোজ সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কিউবার অলি গলিতে ঘুরে বেড়ান। এ সময় মানুষকে ঘুরে ঘুরে জিজ্ঞাসা করেন করোনায় আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ আছে কি না। যারা আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসেছে তাদের আইসোলেশন ঠিকভাবে পালন হচ্ছে কি না- তাও পর্যবেক্ষণ করছেন তার মতো স্বাস্থ্যকর্মীরা।
তিনি বলেন, এই ধরনের কাজ আমাদের জন্য নতুন কিছু না। এর আগেও ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়ার পর সরকার থেকে আমাদের এই কাজ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল।
কিউবাতে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ১৭৩ জনের দেহে এই ভাইরাসটির অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। মারা গেছে ৮৩ জন।
লাইট নিউজ/আই