সৌদি আরবে কর্মরত রুবেল শেখ (২৫) নামের বাংলাদেশি এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। ছেলের মরদেহ ফিরে পেতে মা হাফিজা খাতুনের আহাজারিতে পরিবেশ ভারি হয়ে উঠেছে। ছেলের শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। ছেলের লাশ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকারের কাছে জোড় দাবি জানান।
মঙ্গলবার (১ মার্চ) প্রবাসী রুবেল শেখের মৃত্যুর খবর পান স্বজনেরা। এর পর থেকেই তার বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এর আগে রবিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে আত্মহত্যা করেন রুবেল।
রুবেল সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের খামার পাইকোশা গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে।
বুধবার (২ মার্চ) সকালে নিহতের পারিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় সাত মাস আগে কাজের তাগিদে সৌদি আরবে পাড়ি জমান রুবেল। তিন ভাইয়ের মধ্যে রুবেল দ্বিতীয়। তিনি সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের বলদিয়া কোম্পানিতে কাজ করতেন। এই সাত মাসে পরিবারে ৬০ হাজার টাকাও পাঠিয়েছেন তিনি। গত সোমবার গভীর রাতে রুবেলের সহকর্মীরা ফোনে জানান রুবেল মারা গেছে। সৌদির কোন এক হাসপাতাল মর্গে তার মরদেহ রাখা হয়েছে।
নিহত রুবেলের বাবা জহুরুল ইসলাম বলেন, আমার ছেলে প্রতিদিন একবার হলেও বাড়িতে ফোন করত। সোমবার রাত থেকে আর ফোন করে না। এখন পর্যন্ত ছেলের ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। পরে জানতে পারি আমার ছেলে মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, সোমবার রাতে সোহেলের স্ত্রী খাদিজার কাছে ফোন আসে সৌদি আরব থেকে। পরে আমাকে ডেকে ফোন ধরিয়ে দিলে রুবেলের সহকর্মীরা বলেন রুবেল মারা গেছে। পুলিশ এসে লাশ নিয়ে গেছে। কি কারনে মারা গেছে তারাও বলতে পারেনি। রুবেলের সহকর্মীরা বলছে সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের কোন এক হাসপাতালের মর্গে মরদেহ রাখা আছে। ছেলের মরদেহ ফিরে পেতে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি।
কার মারফতে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছেন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্থানীয় ফিরোজ আহমেদের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে আদম ব্যবসায়ী ফিরোজ আহমেদ জানান, প্রায় সাত মাত আগে রুবেলকে ইয়ার টেডিং করপোরেশন (ঢাকার) মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। রুবেল সৌদি আরবের দাম্মাম শহরে বলদিয়া কোম্পানিতে চাকুরী করত। সে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি।
ইয়ার টেডিং করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী ফেরদৌস রহমান কুট্টি জানান, রুবেলের সহকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারি সে তিন তলায় একটি রুমে গলায় রশি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ দাম্মাম জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরি করা হচ্ছে। মরদেহ দ্রুত বাংলাদেশে আনা হবে।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সজরুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।