বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:১৩ অপরাহ্ন

হাসপাতালে ঢুকতেই পারলেন না, অটোরিকশায় ঢলে পড়লেন তিনি

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০২০

হাসপাতালে ফোন করে নিশ্চয়তা পাওয়ার পর রোগীকে নিয়ে যান স্বজনেরা। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছে দেখেন অন্য চিত্র। জরুরি বিভাগে ঢোকার সুযোগও হয়নি রোগীর। এগিয়ে আসেননি কোনো চিকিৎসকও। হাসপাতালের পার্কিংয়ে অটোরিকশায় বসে থাকা রোগীর অক্সিজেনের মাত্রা মেপে দেখেন এক ওয়ার্ডবয়। এরপর শয্যা খালি নেই জানিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া হয় রোগীকে।

পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে অটোরিকশাতেই নিস্তেজ পড়েন মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী নামের ওই রোগী।

গত দুই দিনে জসিম উদ্দীনসহ চারজন চিকিৎসাসেবা না পেয়ে মারা গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এর মধ্যে দুজন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতা। ১০ মাসের সন্তানসম্ভাবা এক নারীও একইভাবে চিকিৎসার অভাবে মারা গেছেন। তাঁরা সবাই বিভিন্ন হাসপাতালে ঘুরেও ভর্তি হতে পারেননি।

জসিম উদ্দিন চৌধুরীর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সোয়া ২টার দিকে মাথা থেকে ঘাড় পর্যন্ত প্রচুর ব্যথা অনুভব করেন তিনি। তাঁর ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র জোবায়ের চৌধুরী বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে যোগাযোগ করেন ।

জোবায়ের বলেন, বাবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ন্যাশনাল হাসপাতালে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি জানাই। সেখান থেকে বলা হয় ‘জরুরি বিভাগ চালু আছে রোগীকে নিয়ে আসুন।’ এরপর বাবাকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠানোর পর আবারও হাসপাতালে ফোন করে নিশ্চিত হই। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর কোনো চিকিৎসক এগিয়ে আসেননি। হাসপাতালের এক ওয়ার্ডবয় এসে অক্সিজেনের মাত্রা মেপে দেখে জানান বাবার অক্সিজেন সাপোর্ট প্রয়োজন। এরপর ওই ওয়ার্ডবয় চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারপর জানান, তাদের হাসপাতালে শয্যা খালি না থাকায় ভর্তি করা সম্ভব নয়।

জোবায়ের চৌধুরী বলেন, তাৎক্ষণিকভাবে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া গেলে হয়তো বাবাকে বাঁচানো যেত। কিন্তু ন্যাশনাল হাসপাতাল সেই সেবা দেয়নি। পরে কোনো উপায় না দেখে বাবাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাই। কিন্তু সেখানেও কোনো চিকিৎসকের দেখা পাইনি। ওয়ার্ডবয় ও আয়া এসে ইসিজি করার পর জানান, বাবা আগেই মারা গেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে ন্যাশনাল হাসপাতালের পরিচালক আনোয়ার শহীদ বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কেউ অভিযোগ করেনি। তবে ফেসবুকে দেখেছি। আমাদের শয্যা সংকট আছে এটি ঠিক। তবে একজন রোগীকে তো আগে ভর্তি করাতে হবে, অক্সিজেন সেবা দিতে হবে। এটি উচিত হয়নি। বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি।’

বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগী ভর্তি না নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসাসেবা তদারকির কমিটির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়গুলো আমরা নজরদারি করছি। ইতিমধ্যে বিভিন্ন হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে হাসপাতালগুলোকে আমরা সতর্ক করব। এরপরেও যদি তারা রোগী ভর্তি না নেয় তাহলে আইনগত পথে হাঁটব।

লাইট নিউজ

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD