শরীয়তপুরে চলন্ত লঞ্চ থেকে মেঘনা নদীতে পড়ে যাওয়ার ১০ ঘণ্টা পর উদ্ধার হওয়া জোহরা বেগম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
সোমবার (৭ মে) ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
জোহরার মা নার্গিস বেগম মেয়ের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে বলেন, ‘জোহরাকে বাঁচাতে আমরা অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু আমার মেয়েকে বাঁচাতে পারলাম না। ওর দুই ছেলে ও এক মেয়ে মা হারা হয়ে গেল।’
গত বুধবার (৩ মে) এমভি ঈগল-৩ লঞ্চে করে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট থেকে ঢাকা ফিরছিলেন জোহরা বেগম। রাত সাড়ে ১০টার দিকে লঞ্চটি ঠান্ডার বাজার এলাকায় পৌঁছালে অসাবধানতাবশত তিনি লঞ্চের দ্বিতীয় তলা থেকে মেঘনা নদীতে পড়ে যান। সেখানে লঞ্চ থামিয়ে লঞ্চের সার্চলাইট দিয়ে তাকে খোঁজাখুঁজি করা হয়। না পাওয়া গেলে তার সঙ্গে থাকা স্বামী ও ছেলেকে একটি জেলে নৌকায় নামিয়ে দেয়া হয়।
পরে জরুরি সেবা ৯৯৯ থেকে খবর পেয়ে বাংলাদেশ কোস্টগার্ড আউটপোস্ট হাইমচর উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করে। দীর্ঘ ১০ ঘণ্টা অভিযান পরিচালনার পর বৃহস্পতিবার (৪ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় মেঘনা নদীর পাড় থেকে নিখোঁজ জোহরা বেগমকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। লঞ্চ থেকে পড়ে যাওয়ার সময় তার বাঁ পা ভেঙে হাড় বেরিয়ে যায়। রাতেই তার অস্ত্রোপচার হয়।
জোহরা বেগম শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার কুচাইপট্টি ইউনিয়নের পশ্চিম বিষকাটালি গ্রামের বাসিন্দা জহিরুল ইসলামের স্ত্রী। স্বামী-সন্তানের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে থাকতেন তিনি। ঈদে গ্রামে বেড়াতে যান।
কুচাইপট্টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন জানান, জোহরা জীবন বাঁচাতে সাহসের সঙ্গে ১০ ঘণ্টা মেঘনা নদীতে ভেসে ছিলেন। সবার সহযোগিতায় তার উন্নত চিকিৎসা চলছিল।
জোহরাকে কার নিজ গ্রামে দাফন করা হবে বলেও জানান চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন স্বপন।