বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের সর্বশেষ চারটিতেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতেছে ভারত। এর মধ্যে দুটিই ছিল অজিদের মাটিতে। কিন্তু টেস্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা এবারের মতো এমন বিপর্যয় গত ১৩৬ বছরের ইতিহাসে দেখায়নি।
পার্থ টেস্টের দুই ইনিংসেই ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছে প্যাট কামিন্সের দলটি। ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারদের এমন ব্যর্থতা দেখা গিয়েছিল সর্বশেষ ১৮৮৮ সালে।
পার্থে চলমান সিরিজের প্রথম টেস্টে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নামে ভারত। জশ হ্যাজলউড-কামিন্সদের বোলিং তোপে প্রথম ইনিংসে ১৫০ রান তুলতেই তারা গুটিয়ে যায়। এরপর অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিংয়ে নেমে আরও বড় বিপর্যয়ে পড়ে। ৩১ রানেই টপ অর্ডারের চার ব্যাটার বিদায় নেন একে একে।
অলআউট হওয়ার আগে পুরো দল মিলে তোলে মাত্র ১০৪ রান। অজি ব্যাটিংয়ে এমন দৈন্যদশায় ৪৬ রানের লিড পেয়ে যায় ভারত।
দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডারে আর করুণ চিত্র। এবার তারা টপ অর্ডারের ৪ উইকেট হারায় মাত্র ১৭ রানে। অথচ ভারতের দেওয়া ৫৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় বড় ইনিংস ও জুটি গড়ার দায়িত্ব ছিল এসব ব্যাটারের। দুই ইনিংসেই চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন নাথান ম্যাকসুইনি,
উসমান খাজা, মার্নাস লাবুশেন ও স্টিভ স্মিথরা। দুই ইনিংস মিলিয়ে অস্ট্রেলিয়া টপ অর্ডারদের কল্যাণে মাত্র ২৯ রান পেয়েছে।
এ ছাড়া পার্থ টেস্টের দুই ইনিংসে প্রথম ছয় ব্যাটার মিলিয়ে ১২ জনের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার ৭ জনই আউট হয়েছেন এক অঙ্কের ঘরে। যা কোনো টেস্টে যৌথভাবে তাদের সর্বোচ্চ বিপর্যয়ের রেকর্ড। শুরুতেই এমন শোচনীয় দশা বাড়তি চাপে ফেলেছে মিডল ও টেল-এন্ডারদের। যা তারা উৎরে যেতে পারেননি। ফলে ম্যাচটিতে অজিদের হার ছিল কেবলই সময়ের ব্যাপার।
অজিদের দ্বিতীয় ইনিংসে বিপর্যয়ের পরিমাণ কমাতে তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন অজি অধিনায়ক কামিন্স। কিন্তু তিনি নিজেও আউট হয়ে যান মাত্র ২ রানে। সবমিলিয়ে এত কম রানে দুই ইনিংসেই টপ অর্ডারদের উইকেটের পতন আধুনিক ক্রিকেট ইতিহাসে দেখেনি অস্ট্রেলিয়া। এর আগে
সর্বশেষ ১৮৮৮ সালে ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অজিদের প্রথম চার ব্যাটার মিলে দুই ইনিংসে ৩৮ রান করেন। একই বছর টেস্টে লর্ডস এবং সিডনিতে সমান ৪০ রান করে তোলেন অস্ট্রেলিয়ার প্রথম চার ব্যাটার।
বোর্ডার-গাভাস্কার সিরিজের সর্বশেষ চারটিতে হারা অস্ট্রেলিয়া এবারও শুরুটা বিপর্যয় দিয়ে করল। দ্বিতীয় ইনিংসে ট্রাভিস হেড ৮৯ এবং মিচেল মার্শ ৪৭ রান না করলে হয়তো আরও আগেই হার দেখত স্বাগতিকরা। তাদের ২৩৮ রানে অলআউট করে ২৯৫ রানের বড় ব্যবধানে জিতেছে ভারত।
তাদের পক্ষে প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট নেওয়া জাসপ্রিত বুমরাহ দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৩টি।
ম্যাচটি বুমরাহ’র জন্যও স্মরণীয়, রোহিত শর্মার অনুপস্থিতিতে পার্থে তিনি অধিনায়কত্ব দিতে নেমেই সাফল্য পেলেন। এর আগে অবশ্য ২০২২ সালে একটি টেস্টে একইভাবে অধিনায়কত্ব পান এই পেসার। তবে অধিনায়ক হিসেবে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে নিজের অভিষেক টেস্টে হেরে যায় ভারত। নেতৃত্বের দ্বিতীয় ম্যাচে বুমরাহ সেই ক্ষতে প্রলেপ দিলেন!