শুক্রবার, ০৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৩৭ অপরাহ্ন

১৫ দিনে করোনা জয় করে ফিরলেন ৮৫ বছরের বৃদ্ধ

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ১ জুন, ২০২০

৮৫ বছর বয়সী বৃদ্ধ গোলাম মো. আলী খন্দকার। হাঁপানি, হৃদরোগসহ জটিল কয়েকটি রোগে ভুগছিলেন তিনি। এসবের মধ্যে শরীরে হানা দেয় করোনা। জ্বর, ঠান্ডা, কাশি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হন মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। টানা ১৫ দিন চিকিৎসা শেষে করোনা জয় ছেলের বাড়িতে ফিরেছেন বৃদ্ধ গোলাম মো. আলী খন্দকার।

সদর হাসপাতাল সূত্র জানায়, রাজৈর উপজেলার লুন্দি এলাকায় করোনা আক্রান্ত এক ইমামের সংস্পর্শে এসে আক্রান্ত হন গোলাম মো. আলী খন্দকার। গত ১৪ মে তাকে গুরুতর অবস্থায় ভর্তি করা হয় মাদারীপুর সদর হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে। সিভিল সার্জনের নির্দেশনায় তাকে সুস্থ করতে গঠন করা হয় মেডিকেল বোর্ড। টানা ১৫ দিন চিকিৎসা শেষে শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে তাকে ছাড়পত্র দেয় মাদারীপুর সদর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

গোলাম মো. আলী খন্দকার মৎস্য বিভাগের একজন কর্মচারী ছিলেন। তার পাঁচ ছেলে ও এক মেয়ে। পাঁচ ছেলের মধ্যে চারজনই প্রতিষ্ঠিত। করেন সরকারি চাকরি। গোলাম মো. আলী খন্দকার থাকেন ছোট ছেলে আসাদুজ্জানের কাছে। চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পর গ্রামের বাড়িতে নাতি-নাতনিদের সঙ্গে সময় কাটতো তার। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বাঁচার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন গোলাম মো. আলী খন্দকার।

তিনি বলেন, অনেক দিন শরীরের অবস্থা ভালো না। লাঠি ভর দিয়ে হাঁটতে হয়। হাঁটুর ব্যথায় নিচে বসতে পারি না। অনেক কষ্টে নাতিদের নিয়ে চলছিল জীবন। করোনা হওয়ার পর শরীর আরও ভেঙে পড়ে। বেঁচে থাকার আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম আর বেঁচে ফিরতে পারবো না। কিন্তু আল্লাহর রহমত ও চিকিৎসকদের আন্তরিক প্রচেষ্টায় আমি সুস্থ হয়ে আবার ছেলের বাড়ি ফিরে এসেছি। এই বয়সে এর থেকে আর বড় সুখ হতে পারে না।

বৃদ্ধ বাবাকে সুস্থ শরীরে ফিরে পাওয়ায় খুশি হয়েছেন আসাদুজ্জান ও তার স্ত্রী সুমি। আসাদুজ্জান বলেন, চিকিৎসকরা আমার বাবার শুধু করোনার চিকিৎসা করেননি, তারা বাবার হাঁপানি, হাঁটুর ব্যথা ও মাজার ফোঁড়াও চিকিৎসা করেছেন। আবার বাবা আগের থেকে অনেক সুস্থ। বাবাকে ফিরে পাওয়াটা আমার কাছে স্বপ্নের মতো।

মাদারীপুরের সিভিল সার্জন মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, চারিদিকে দুঃখ-কষ্টের মাঝে আনন্দের সংবাদও আছে। করোনা থেকে বৃদ্ধ গোলাম মো. আলী খন্দকারকে সুস্থ করতে পেরে আমরাও আনন্দিত। তিনি করোনা টিমের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক, সেবিকাসহ চতুর্থ শ্রেণির সব কর্মচারীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য মতে, রোববার (৩১ মে) নতুন করে আরও ২৩ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে রাজৈর উপজেলার ১৫ জন, কালকিনি উপজেলার চারজন, সদর উপজেলার দুইজন ও শিবচর উপজেলার দুইজন রয়েছেন। এ নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১২৩ জনে দাঁড়ালো। জেলায় মোট সুস্থ হয়েছেন ৬৫ জন, মৃত্যু হয়েছে দুইজনের। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৩ জন। নতুন আক্রান্ত ২৩ জনকে আইসোলেশনে আনার প্রস্তুতি চলছে।

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD