সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

খুলছে সব পর্যটনকেন্দ্র

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২১

ডেস্ক রিপোর্ট : করোনা মহামারি শুরুর পাঁচ মাসের বেশি সময় লকডাউন চলায় চরম লোকসানে পড়েছিল কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প। সেই রেশ কাটতে না কাটতে সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় চলতি বছরের পহেলা এপ্রিল থেকে টানা সাড়ে চার মাস কঠোর বিধিনিষেধের কবলে পড়ে এ শিল্প। এ সময়ে ১০ হাজার কোটি টাকা লোকসান হয়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। আর সেই লোকসান মাথায় নিয়ে আগামী ১৯ আগস্ট খুলছে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প।

জেলা প্রশাসন ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গেল সাড়ে ৪ মাস ধরে স্তব্দ বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। পহেলা এপ্রিল থেকে টানা বন্ধ রয়েছে কক্সবাজার জেলার পর্যটন ও বিনোদন কেন্দ্র। ১৯ আগস্ট থেকে পর্যটনকেন্দ্র, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র চালু রাখা হবে। তবে ধারণক্ষমতার অর্ধেক দর্শনার্থী প্রবেশ করতে পারবেন। বৃহস্পতিবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক আদেশে সরকারের এ সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়েছে। ফলে সমুদ্র নগরী আবারো পর্যটকের কোলাহলে মুখরিত হবে। সাড়ে চার মাসের ক্ষত কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াবে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্প এমন আশায় বুক বাধছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, সমুদ্র সৈকতের কলাতলি, লাবনী, সুগন্ধা, কবিতা চত্বরসহ ১১টি পয়েন্ট ও হিমছড়ি, মেরিন ড্রাইভ, ইনানী, সেন্টমার্টিন, ডুলাহাজরা বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক, মহেশখালীর আদিনাথ মন্দির, রামু ও টেকনাফের বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো পর্যটকে ঠাসা থাকলেও করোনা পরিস্থিতির কারণে পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে এখনো সুনসান নীবরতা বিরাজ করছে।

হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম বলেন, কিছু দিন পর পর লকডাউনে কক্সবাজারের ব্যবসায়ীরা চরম লোকসানে পড়েছিল। প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকার লোকসান কাটিয়ে উঠা কঠিন। তাই কিছু ব্যবসায়ীকে সরকারিভাবে আর্থিক সহযোগিতা করা প্রয়োজন।

কক্সবাজারের হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র আবু তালেব শাহ বলেন, মহামারি কাটিয়ে আমরা আবার নতুন করে শুরু করতে পারছি। লকডাউনে সাড়ে চার শতাধিক হোটেল-মোটেল ফাঁকা হয়ে পড়েছিল। বেকার হয়েছে অন্তত অর্ধ-লক্ষাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী। হয়তো যে লোকসান তা এতো দ্রুত কাটিয়ে উঠা সম্ভব নয়। তবে পুরোদমে কাজ করতে পারলে হয়তো এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠা সম্ভব।

হোটেল পিংসোর ব্যবস্থাপক সামিউল আলম শুভ ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুঃশ্চিন্তা কাটিয়ে সবকিছু প্রস্তুত করা হচ্ছে। এক প্রকার ভুতুড়ে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। হয়তো সেই অন্ধকার কাটিয়ে আলোর মুখ দেখবো আমরা।

কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, গেল লকডাউনে যে লোকসান হয়েছে তা কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছিল ব্যবসায়ীরা। কিন্তু আবারো লকডাউনের কবলে পড়ে লোকসানের অংকটা বড় হয়েছে। আগামী ১৯ আগস্ট যেহেতু খুলছে, তাই সবাই প্রস্তুত হচ্ছে ব্যবসার জন্য। এখন দেখার বিষয়, বিধিনিষেধ দীর্ঘ মেয়াদে তুলে নেওয়া হচ্ছে কি না।

জেলা প্রশাসক ও জেলা করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ বিষয়ক কমিটির সভাপতি মো. মামুনুর রশীদ বলেন, আগামী ১৯ আগস্ট ৫০ শতাংশ হোটেল-মোটেল খোলার অনুমতি মিলছে। সে হিসেবে পর্যটন ব্যবসায়ীরা কাজ করবে। তবে জেলা প্রশাসন স্বাস্থ্যবিধির কঠোর নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করবে। যদি কেউ নির্দেশনা ভাঙার চেষ্টা করে তাহলে জেল-জরিমানাও হতে পারে। ব্যবসায়ী ও কাস্টম কর্মকর্তাদের তথ্য মতে, ২০২০ সালের আগস্ট থেকে গেল ফেব্রুয়ারির ২৮ তারিখ পর্যন্ত কক্সবাজারের পর্যটনখাতে আয় হয়েছে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। যা অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। আর এসব আয় থেকে ভ্যাট আদায় হয়েছে প্রায় ১৬০ কোটি টাকা।

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD