মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন

মেটার কাছে তথ্য চেয়েছেন আর্জেন্টিনার আদালত

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৯ মার্চ, ২০২২

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার কাছে রোহিঙ্গা গণহত্যায় উসকানি সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছেন আর্জেন্টিনার আদালত। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা ‘জেনোসাইডের’ (নির্মূলের লক্ষ্যে গণহত্যা, গণবাস্তুচ্যুতিতে বাধ্য করার মতো অপরাধ) অভিযোগে আর্জেন্টিনার ফেডারেল আদালত গত ২৪ ফেব্রুয়ারি মেটার কাছে তথ্য চান।

ওই মামলার বাদী ও সাক্ষী বার্মিজ রোহিঙ্গা অর্গানাইজেশন, ইউকের (ব্রুক) সভাপতি তুন খিন গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালের কণ্ঠকে বলেন, আর্জেন্টিনার আদালতের আদেশের কথা তাঁরা সম্প্রতি জানতে পেরেছেন। তিনি বলেন, পারস্পরিক আইনি সহায়তার বিষয়ে আর্জেন্টিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে একটি চুক্তি আছে।

সেই চুক্তির আওতায় আর্জেন্টিনার আদালত যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান মেটার কাছে তথ্য চেয়েছে।
তুন খিন বলেন, ‘আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগের ওই আদেশ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফেসবুক ব্যবহার করে কেবল রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধেই নয়, সারা বিশ্বে নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়ানো বন্ধে আরো উদ্যোগ নিতে হবে। ’

তিনি বলেন, আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগের এই আদেশে তিনি বেশ আশাবাদী। রোহিঙ্গা জেনোসাইডের জবাবদিহি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হিসেবে ফেসবুকের ভূমিকা আমলে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।

তুন খিন বলেন, ফেসবুক ব্যবহার করে জেনোসাইড, মানবতাবিরোধী অপরাধসহ যেসব গুরুতর অপরাধ হয়েছে সেগুলোর তথ্য-প্রমাণ ও এটি ঠেকাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা আদালতে জানাতে হবে। এ ক্ষেত্রে মেটার স্বচ্ছতা বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

২০১৬ ও ২০১৭ সালে মিয়ানমারে ব্যাপক নিপীড়নের মুখে আট লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। জাতিসংঘ গঠিত স্বাধীন সত্যানুসন্ধানী কমিশন রোহিঙ্গা গণহত্যাসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আলামত দেখতে পায় এবং বিচারের সুপারিশ করে।

ব্রুকের পক্ষে তুন খিন ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর রোহিঙ্গা গণহত্যায় মিয়ানমারের সামরিক ও বেসামরিক নেতাদের ভূমিকা তদন্তের আবেদন জানান। আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেসের ফেডারেল ক্রিমিনাল কোর্টের দ্বিতীয় চেম্বার আদালত গত ২৬ নভেম্বর ‘সর্বজনীন এখতিয়ার’ নীতির আওতায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জেনোসাইডের বিচার শুরুর সিদ্ধান্ত নেন। রোহিঙ্গা গণহত্যার বিচারে ‘সর্বজনীন এখতিয়ার’ নীতি প্রয়োগের ঘটনা বিশ্বে এটিই প্রথম। ‘সর্বজনীন এখতিয়ার’ নীতির আওতায় ভয়ংকর অপরাধের বিচার বিশ্বের যেকোনো স্থানে করা যায়।

তুন খিন গত ডিসেম্বরে আর্জেন্টিনার আদালতে সাক্ষ্য দেন। সে সময় তিনি রোহিঙ্গা গণহত্যার পরিকল্পনা প্রণয়ন, নির্দেশদাতা ও বাস্তবায়নকারী হিসেবে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক (বর্তমানে জান্তাপ্রধান) সিনিয়র জেনারেল অং মিন হ্লাইংসহ আরো কয়েকজন জেনারেলের নাম উল্লেখ করেন। বিশেষ করে, তিনি ২০১৭ সালে রোহিঙ্গা গণহত্যার সময় ফেসবুকের বিপজ্জনক ভূমিকার কথাও আদালতে তুলে ধরেন। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিদ্বেষমূলক লেখালেখি, গণহত্যায় উসকানির বিষয়ে ফেসবুক তখন কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি উল্লেখ করে তুন খিন এ বিষয়ে ফেসবুকের কর্তৃপক্ষের কাছে তথ্য চাওয়ার আবেদন করেছিলেন।

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD