মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

চট্টগ্রামে বাবার লাশ হাসপাতালে ফেলে পালালো ছেলেরা

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১৫ মে, ২০২০

ডেস্ক রিপোর্ট : মাত্র তিনদিন আগেই মা দিবস ঘিরে ফেসবুকে কতোই না আবেগী স্ট্যাটাস সবার! আর সামনের মাসেই বাবা দিবস। তখনও হয়ত বাবাকে দিয়ে সবাই স্ট্যাটাসের ঝড় তুলবেন। কিন্তু মা দিবস-বাবা দিবস এলেই ফেসবুকে অহরহ স্ট্যাটাস দিলেও এমনও সন্তান আছে যারা হাসপাতালে বাবার লাশ ফেলে পালিয়ে যায়। এমনই ঘটনা ঘটলো চট্টগ্রামের পার্কভিউ হাসপাতালে। শুধু মৃত ব্যক্তির ছেলে নয়, এমনকি তার স্বজনেরাও পালিয়ে গেছেন।

বুধবার (১৩ মে) দুপুর আড়াইটায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পার্কভিউ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এটিএম রেজাউল করিম। তিনি বলেন, আমাদের হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এনয়ামুল কবির তানভীরের কাছে মৃত ব্যক্তির ছেলে এসে জানালেন তার বাবার অবস্থা শংকটাপন্ন। তখন ডা. তানভীর আমাদের আরেক মেডিকেল অফিসার ডা. রিয়াস মুনতাসির ও নার্সরা মিলে রোগীর হিস্ট্রি নিয়েছেন।

হিস্ট্রি নিয়ে চিকিৎসকরা মৃত ব্যক্তির ছেলেকে জানালেন তার পিতা মৃত। তখন তারা কনফার্ম হতে চাইলে নিয়ম অনুযায়ী ইসিজি করানোর জন্য তাকে ইসিজি কক্ষে নিয়ে ইজিসি করলেন। মাত্র ৩ মিনিটের মধ্যে ইসিজি রিপোর্ট নিয়ে দরজার বাইরে এসে ডা. তানভীর দেখেন স্বজনেরা কেউ নেই। যাওয়ার সময় বৃদ্ধকে বহনকারী হুইল চেয়ারও নিয়ে গেছে তারা।

পরে আমরা বিষয়টি থানাকে জানাই। এরপর এক পুলিশ কর্মকর্তা লাশটি তার মামার বলে শনাক্ত করে গ্রামের বাড়ি পটিয়া নিয়ে যান।

পার্কভিউ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. এনামুল কবির তানভীর তার ফেসবুক ওয়ালে লিখেছেন, ‘গোটা বিশ্বের এই ক্রান্তিলগ্নে যখন ডাক্তারদের ফ্রন্ট লাইনের যোদ্ধা বলা হচ্ছে, সুপার হিরোর তকমা দেওয়া হচ্ছে, অথচ বলা বাহুল্য, দেশের প্রতিটি সন্তানের কাছে তাদের বাবারা সুপার হিরো, একটি পরিবারের প্রধান সেনাপতি, যখন ঐ বাবাটার নিথর দেহ স্ট্রেচারে পড়ে আছে, অবাক দৃষ্টিতে একটিবার যখন ঐদিক তাকিয়ে দেখি, তখন বুকের ভেতর বড্ড ফাঁকা মনে হয়। গলার কাছে কান্নার দমক এসে গলাটা ভারী হয়ে উঠে।’

‘আমাদের চলার পথে যে মানুষটার অবদান থাকে নীরবে, অব্যক্ত, অকৃত্রিম ভালোবাসায় ভরা, একজন সত্যিকারের সুপার হিরোর মতো তিনিই আমাদের বাবা। পৃথিবীর সকল বাবারা অনেক ভালো থাকুক। লা-ওয়ারিশ হয়ে হাসপাতালে স্ট্রচারে পড়ে না থাকুক। সন্তানের প্রচণ্ড ভালোবাসায় সিক্ত থাকুক বারো মাস বাবাদের নরম দয়ার্দ্র হৃদয়…’ — লিখেছেন তরুণ ওই চিকিৎসক।

এ বিষয়ে পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, ছেলে বা স্বজনেরা হয়তো ভয় পেয়েছিল। পরে অন্য স্বজনেরা এসে লাশ বুঝে নিয়েছেন।

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD