যশোরের ঝিকরগাছায় বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে ছয় ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে আরও চারজন। মঙ্গলবার ও বুধবার (১৬ ও ১৭ জুন) দুইদিনে এ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। তবে অ্যালকোহল পানের বিষয়টি পরিবারের পক্ষ থেকে অস্বীকার করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, ঝিকরগাছা উপজেলার রাজাপুর গ্রামের আবুল গাজীর ছেলে হাবিল গাজী (৬০), বর্ণি গ্রামের সুরোত আলীর ছেলে ফারুক হোসেন (৪০), হাজিরআলী গ্রামের মৃত গোহর আলীর ছেলে আসমত আলী (৫০), পুরান্দরপুর গ্রামের মৃত-ফকির ধোপার ছেলে হামিদুর রহমান (৫৫), রাজাপুর গ্রামের আলফাজের ছেলে নুর ইসলাম খোকা (৫৫) ও ঋষিপাড়ার মৃত রশিক লালের ছেলে নারায়ণ (৫৫)।
ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, কাউরিয়া ঋষিপাড়ার মৃত সন্ন্যাসী দাসের ছেলে রিপন দাস (৪০) ও নীল কুমারের ছেলে কিশোর দাস (৩২) ও নাফিস হোসেন।
এছাড়াও বুধবার সকালে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছে, হাজিরআলী গ্রামের মৃত আবুল কালামের ছেলে সেলিম হোসেন (৩৪)।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন কিশোর দাস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মঙ্গলবার (১৬ জুন) রাজাপুর গ্রামের হাবিল গাজীর কাছ থেকে তিন’শ টাকার এক বোতল অ্যাকোহল কিনে এসে চাচী দুখিনি দাস ও সে পান করে। কিছুক্ষণ পরে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। এর আগেও তার বাড়ি থেকে নেশাদ্রব্য কিনে সেবন করেছে বলেও স্বীকার করেন।
গুরুতর অসুস্থ নাফিজ হোসেন নামে আরেকজন জানান, পুরানন্দরপুর গ্রামের জলিল সর্দারের ছেলে মিন্টুর নিকট থেকে ওই মদ কিনে খোকা, নারায়ণ ও হামিদুরের সাথে তিনিও পান করেছিলেন। বাড়িতে ফিরে কিছুক্ষণের মধ্যে তিনিসহ সকলেই অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদেরকে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খোকা, হামিদুর ও নারায়ণ মারা যায়। মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাবিল গাজী, ফারুক হোসেন ও আছমত আলী মারা যায়।
মৃত ব্যক্তিদের সকলকে হাসপাতাল থেকে হৃদরোগে মারাগেছে বলে ছাড়পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় এত মানুষের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক সরেজমিনে মৃত ব্যক্তিদের বাড়ি গেলে পরিবার হাসপাতালের ছাড়পত্র দেখায়।
ঝিকরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রাশিদুল আলম বলেন, বিষাক্ত অ্যালকোহল পান করে অসুস্থ হলে তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। একজনের অবস্থার অবনতি দেখে তাকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে রেফার করা হয়।
ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মৃতরা সকলেই বিষাক্ত অ্যালকোহল পান করেছিল বলে শোনা যাচ্ছে। তবে বিষয়টি তাদের পরিবার অস্বীকার করেছে এবং হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে হাসপাতালের ছাড়পত্র দেখিয়েছে। মৃতবরণকারী হাবিল গাজী কিছুদিন আগে মাদক সহ সস্ত্রীক আটক হয়েছিল। তাদের নামে একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি আরো জানান, বিষয়টি আরো গুরুত্বের সাথে তদন্ত করা হচ্ছে।
লাইটনিউজ/এসআই