উপজেলা নির্বাচন সরকারের আরেকটা ‘ভোটচুরির ভাঁওতাবাজি’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। আজ বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে এক আলোচনাসভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘ওরা উপজেলা নির্বাচন দিয়েছে। যে দেশে ভোট নাই সেই দেশে ভোটে অংশগ্রহণ করার কোনো সুযোগ নাই।
যেখানে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী নাই, যেখানে কোনো পার্টিসিপেশন নাই, সেখানে আবার কিসের ভোট? সুতরাং এই উপজেলা নির্বাচন দেশের মানুষকে একটা ধাপ্পাবাজির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। এটা ভোটের নামে ভাঁওতাবাজি। ভোট বলে কিছু নাই এই এ দেশে। একটা ভোটচুরি প্রকল্পের মাধ্যমে পুরো জাতিকে আজকে তারা (সরকার) জিম্মি করে রেখেছে।
সরকারের এহেন অপকর্মের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর ‘ঐক্য অটুট’ থাকার কথা পুনর্ব্যক্ত করে আমীর খসরু বলেন, ‘আমাদের সুখবর হচ্ছে, বাংলাদেশের মানুষ আজকে তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। আমরা যারা বিরোধী দলে আছি আমাদের ঐক্য অটুট আছে। বিএনপির ঐক্য অটুট আছে। এই ঐক্য ভাঙার চেষ্টায় কোনো কিছু বাকি নাই।
টাকা-পয়সা থেকে ভয়ভীতি থেকে, জেল-জুলুম থেকে, নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে সব চেষ্টা করা হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাকর্মীরা ধানক্ষেতে ঘুমিয়েছে, বেড়িবাঁধে ঘুমিয়েছে। কিন্তু নেতাকর্মীরা কম্প্রোমাইজ করেনি। বিরোধী দলের নেতারা কেউ কম্প্রোমাইজ করেনি। আমরা ৩১ দফা ঐক্যবদ্ধভাবে দিয়েছে…এটা চলমান আন্দোলনের দফা অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সাম্য-মানবিক মর্যাদা, ন্যায়বিচার ইত্যাদি বিষয়ে আমরা এক হয়েছি।
আমাদের এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। আমরা এই আন্দোলন চলমান আছে।’
৭ জানুয়ারির ভোটে ৯৫ শতাংশ ভোটার না যাওয়া থেকে চলমান আন্দোলন বিরোধী দলের ‘রাজনৈতিক সফলতা’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৯৫ শতাংশ মানুষ ওই নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে যায়নি। এবার সেই চিন্তা থেকে সরকার ভোটারদের আনতে নতুন কৌশল নিয়েছে। এবার তারা চিন্তা
করেছে যে, মানুষ নৌকাকে ভয় পায়…নৌকার কথা শুনলে বোধ হয় ভোটকেন্দ্রে যাবে না। সে জন্য নির্বাচনে তারা এবার দলীয় প্রতীক বাদ দিয়ে দিয়েছে। অথচ তারাই স্থানীয় সরকার আইন করেছে নৌকা দিয়ে অর্থাৎ দলীয় প্রতীক দিয়ে নির্বাচন করার জন্য। আইনটা কিন্তু বাতিল করেনি…আইন
রেখে তারা এখন নৌকা প্রতীক নিয়ে জনগণের কাছে যাচ্ছে না। কারণ ওরা দেখছে, বাংলাদেশের জনগণ নৌকা যেখানে আছে তারা সেখানে নাই…তারা নৌকা বয়কট করেছে। তাই এই উপজেলা নির্বাচন আরেকটি ভাঁওতাবাজির নির্বাচন। ভোট চুরি প্রকল্পই তাদের ক্ষমতার উৎস, এই ভোট চুরির প্রকল্প তাদের ক্ষমতায় রাখার ব্যবস্থা করেছে।’
বিএনপি ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা করেছে। গতকাল দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকের নেওয়া এই সিদ্ধান্তের কথা গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির উদ্যোগে ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রকাশের দিনটি ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতির দাবিতে এই আলোচনাসভা হয়। ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মধ্য দিয়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের আত্মপ্রকাশ করে। এর ধারাবাহিকতায় ২৬ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা এবং ১৭ এপ্রিল মেহেরপুরের আম্রকাননে প্রবাসী সরকার শপথ গ্রহণ করে। আলোচনাসভায় প্রজাতন্ত্র দিবসের দাবি উপস্থাপন করেন জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন