অর্থনৈতিক রিপোর্টার : দেশীয় শিল্পের সুরক্ষার স্বার্থে সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি পেশ করেছে বাংলদেশ অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারারস অ্যাসোসিয়েশন (বামা)। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে, ভিন্ন নামে বিদেশি লাইট ট্রাকের রেজিস্ট্রেশন বন্ধ করা, স্পেয়ার পার্টস আমদাই শুল্কমুক্ত করা অন্যতম।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি তুলে ধরেন সংগঠনের প্রেসিডেন্ট আবদুল মাতলুব আহমাদ। বক্তব্য রাখেন, সদ্যসাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজুর রহমান খান, ভাইস প্রেসিডেন্ট তাসকীন আহমেদ এবং জয়েন্ট সেক্রেটারি মিসেস সোহানা রউফ চৌধুরী।
বামা’র প্রেসিডেন্ট আবদুল মাতলুব আহমাদ দেশে টু হুইলার, থ্রি হুইলার, বাস, ট্রাক ও পিক-আপ নির্মাণ শিল্পের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ তুলে ধরে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সরকারের নীতিগত সহযোগিতা পেলে আমরা নিকট-ভবিষ্যতে দুই ও তিন চাকার গাড়ি, বাস, ট্রাক, মিনিবাস এমনকি ইলেক্ট্রিক গাড়ি পর্যন্ত দেশেই নির্মাণ ও রফতানি করতে সক্ষম হবো। এ লক্ষ্যে আমরা গত জানুয়ারি মাস থেকেই এ২আই ল্যাব এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের সাথে অবিরাম কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ২০২০ সালকে লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং ইয়ার ঘোষণা করেছেন, তখন চীন থেকে আসা লাইট ট্রাকগুলোকে এ দেশে পিক আপ নামে রেজিস্ট্রেশন করা হচ্ছে। দেশীয় শিল্পের স্বার্থে এটা এখনই বন্ধ করা প্রয়োজন।
আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ডলারের সঙ্কট তৈরী হবে এবং এ কারণে নতুন গাড়ি আমদানিও বিঘ্নিত হতে পারে। তাই হাতে থাকা গাড়িগুলোই যাতে কমপক্ষে আগামী দুই বছর পর্যন্ত ব্যবহার করা যায়, সেজন্য চলতি অর্থবছরে যত ধরনের স্পেয়ার পার্টস আমদানি হবে, সবগুলোই শুল্কমুক্ত করা হোক।
বামা’র সদ্যসাবেক প্রেসিডেন্ট হাফিজুর রহমান খান দেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় মোটর সাইকেলের গুরুত্ব তুলে তাঁর বক্তব্যে বলেন, এখন দেশে মোটর সাইকেল শুধু উৎপাদনই হচ্ছে না, বিদেশে রফতানিও হচ্ছে, আনছে মুল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা। সরকার এ খাত থেকে প্রতি বছর শুল্ক, কর ও ভ্যাট বাবদ প্রায় ২,০০০ কোটি টাকা আয় করে থাকে।
তিনি গ্রামীণ জনপদে পরিবহণের ক্ষেত্রে থ্রি হুইলারের অবদান তুলে ধরে বলেন, বর্তমানে দেশে বিভিন্ন ধরনের ১৪ লাখ থ্রি হুইলার চলাচল করলেও এগুলোর রেজিস্ট্রেশন উন্মুক্ত না থাকায় ওসব থ্রি হুইলারের ৯০ ভাগই অবৈধ। এগুলোর রেজিস্ট্রেশন উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, তাহলে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ সরকার বছরে ২,০০০ কোটি টাকা আয় করতে পারে। আর তখন দেশেই থ্রি হুইলার উৎপাদনও উৎসাহিত হবে।
বামা-র ভাইস প্রেসিডেন্ট তাসকীন আহমেদ তাঁর বক্তব্যে তৈরী পোশাকশিল্প থেকে শুরু করে খাদ্য, ওষুধ এবং দৈনন্দিন চাহিদার সব পণ্য পরিবহণে তথা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে ট্রাকের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি জানান, ট্রাক আমদানি খাত থেকে শুল্ক ও ভ্যাট বাবদ সরকার প্রতি বছর আড়াই হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ আয় করে থাকে।
বামা’র জয়েন্ট সেক্রেটারি মিসেস সোহানা রউফ চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বর্তমান মহামারী পরিস্থিতিতেও দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখার কার্যকর উদ্যোগ নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জনগণের কর্মসংস্থানে গণপরিবহন তথা বাস-মিনিবাসের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, আজ দেশে বিশ্বের সবচাইতে উন্নত মডেলের এসি বাস, আর্কিলুটেট বাস ও এয়ার সাসপেনশন বাস যাত্রীদের আরামদায়ক ও গতিশীল সেবা নিশ্চিত করছে।####