করোনাভাইরাসের প্রাদুর্বাভে পর্তুগাল থেকে আর্জেন্টিনা যাওয়ার বিমানপথ বন্ধ। ফলে বৃদ্ধ বাবা-মাকে দেখতে যাওয়ার কোনো উপায় পাচ্ছিলেন না নাবিক হুয়ান ম্যানুয়েল ব্যালেসটেরো। কিন্তু বাবা-মায়ের ভালোবাসার কাছে কি আর কোনো বাঁধা টেকে?
করোনাভাইরাসের কারণে লকডাউন শুরু হওয়ার পরেই নিজের ছোট নৌকা নিয়ে রওনা দেন ম্যানুয়েল। এরপর চলতে থাকে তার টানা ৮৫ দিনের কঠিন এক যাত্রা। শেষমেষ তিনি আর্জেন্টিনায় এসে পৌঁছান এবং তার বাবা-মায়ের সাথে দেখা করেন।
আর্জেন্টিনায় আসার পর ম্যানুয়েলের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয় এবং টেস্টের ফল আসে নেগেটিভ। এরপর তাকে তার ৮২ বছর বয়সী মা ও ৯০ বছর বয়সী বাবার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়।
“শুধুমাত্র পরিবারের সাথে দেখা করার জন্য দীর্ঘ তিন মাস লড়াই করেছি। আমি সৌভাগ্যবান যে আমি শেষ পর্যন্ত আমার কাজটি করতে সক্ষম হয়েছি,” দেশে পৌঁছার পর সংবাদ মাধ্যমের কাছে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন ম্যানুয়েল।
মে মাসের ১৫ তারিখ তার বাবার জন্মদিন ছিলো। তার মধ্যেই বাড়িতে পৌঁছানোর পরিকল্পনা ছিলো তার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি তা না পারলেও বাবা দিবসের আগেই বাবার কাছে পৌঁছান তিনি।
ম্যানুয়েল মূলত কাজ করেন স্পেনে। করোনাভাইরাস লকডাউনের কারণে তার বাড়ি ফেরার সব রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। এরপরই ছোট একটি জলযান নিয়ে যাত্রা শুরু করেন তিনি।
৫৪ দিন পর্যন্ত নিজের পরিবারের সাথে তার কোনো রকম যোগাযোগ ছিলো না।
“দীর্ঘ দিন তার সঙ্গে আমাদের কোনো যোগাযোগ ছিলো না। কিন্তু আমরা বিশ্বাস করছিলাম যে সে ফিরে আসছে। তার ফেরার বিষয়ে আমাদের কোনো সন্দেহ ছিলো না,” ম্যানুয়েলের বাবা কার্লোস সংবাদ মাধ্যমকে বলেন।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আর্জেন্টিনায় অন্তত ১০০০ লোকের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই ম্যানুয়েলের বাবা-মার বয়সী বৃদ্ধ মানুষ।
১২,০০০ কিলোমিটার জলপথ পাড়ি দেওয়ার পথে ব্রাজিলে প্রথমবার এবং শেষবার উরুগুয়েতে যাত্রাবিরতী দেন ম্যানুয়েল।