বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫, ০৬:১২ অপরাহ্ন

বাড়ির পাশে নতুন ঘরে কোয়ারেন্টাইনে সেই নারী স্বাস্থ্যকর্মী

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় আওয়ামী লীগ নেতার নির্দেশে নির্জন পুকুর পাড়ে ঝুপড়ি ঘরে কোয়ারেন্টাইনে রাখা এক নারী স্বাস্থ্যকর্মীকে (২১) সাত দিন পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার দুপুরে কাটালীপাড়া থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। পরে নিজের বাড়ির পাশে একটি ছাপড়া ঘর তুলে সেখানে তাকে রাখা হয়। এছাড়া পুলিশ ওই ঝুপড়িঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ওই স্বাস্থ্যকর্মী ঢাকার ইমপালস হাসপাতালে এক চিকিৎসকের এটেনডেন্ট পদে চাকরি করেন। করোনা সংক্রমণের কারণে গত ২১ এপ্রিল তিনি কোটালীপাড়ার সাদুল্লাহপুরের লখন্ডা গ্রামের বাড়িতে আসেন। বাড়িতে আসার পর সাদুল্লাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রশান্ত বাড়ৈর নির্দেশে তাকে একটি নির্জন স্থানে পুকুরের মধ্যে তালপাতা দিয়ে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে সেখানে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়। এ ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

ওই নারী জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ছুটি দেয়। এরপর তিনি বাড়িতে এলে এলাকাবাসী বাড়ির প্রায় ৪০০ মিটার দূরে নির্জন স্থানে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে তাকে কোয়ারেন্টাইনে রাখে।

তিনি আরও বলেন, প্রায় এক সপ্তাহ সেখানে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে ছিলাম। খুব কষ্ট হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে অনেক মানুষকে সেবা দিয়েছি। আজ আমার এ অবস্থা। মানুষ যে এতোটা নিষ্ঠুর হতে পারে তা আগে জানা ছিল না। সাত দিন পর পুলিশ আমাকে সেখান থেকে নিয়ে এসেছে।

কান্নাজরিত কণ্ঠে ওই নারীর মা বলেন, আমার স্বামী নেই। মেয়েটাই একমাত্র উপার্জন করে। তার আয়ে সংসার চলে। মেয়ের এখনো বিয়ে হয়নি। তাকে এভাবে একটি পুকুর পাড়ে ঝুপড়ি ঘরে রাখা হয়েছিল। প্রশান্ত বাড়ৈ চাপ সৃষ্টি করে আমার মেয়েকে সেখানে রেখেছিল। আমি এর বিচার চাই।

আওয়ামী লীগ নেতা প্রশান্ত বাড়ৈ বলেন, এলাকাবাসীর সিন্ধান্তেই ওই নারীকে ঝুপড়ি ঘরে রাখা হয়। আমি একা কোন সিদ্ধান্ত দেইনি। এখন অপরাধ হলে সবার হবে। এখানে আমার একার দায় নেই।

কোটালীপাড়া থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমান বলেন, ঝুপড়ি ঘর থেকে ওই নারীকে উদ্ধার করে তাদের ঘরের পাশে নতুন একটি ছাপড়া ঘর তুলে সেখানে রাখা হয়েছে। ওই নারীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দিলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কোটালীপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মাহফুজুর রহমান বলেন, ওই নারী স্বাস্থ্যকর্মীর বাড়িতে গিয়েছিলাম। তাকে খাদ্য সহায়তা দিয়েছি। কোন সমস্যা হলে আমাদের জানাতে বলেছি। তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ফরিদপুর পাঠানো হবে। যারা তাকে অমানবিকভাবে ঝুপড়ি ঘরে রেখেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

লাইট নিউজ

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD