মঙ্গলবার, ১১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন

‘করোনার ভয়ে মানুষকে তো না খাইয়ে মারতে পারি না’

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : রবিবার, ১৪ জুন, ২০২০

সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
অদৃশ্য শক্তি করোনাভাইরাসের কারণে পুরো বিশ্ব আজ স্থবির। অদৃশ্য শক্তি করোনা যা কেউ চোখেও দেখতে পারে না বুঝতেও পারে না। সারা বিশ্বটাকে কেমন একটা অস্বাভাবিক পরিবেশ সৃষ্টি করল। ভয় এবং আতঙ্ক সব জায়গায় একই অবস্থা। ইউরোপ-আমেরিকা ও পশ্চিমা দেশ থেকে আক্রান্তের ‘ওয়েবটা’ (ঢেউ) এখন দক্ষিণ এশিয়ার দিকে।

রোববার (১৪ জুন) দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে সাবেক মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম ও ধর্মপ্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ’র মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। সেই শোক প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি মানুষকে বোঝাতে অন্তত স্বাস্থ্যবিধিটা যেন মেনে চলে। এটা খুব সাংঘাতিক সংক্রামক ব্যাধি। সংক্রমণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা, এই রক্ষা করার জন্য সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য বলেছি। পাশাপাশি এটা বাস্তবতা মানুষগুলোকে করোনার ভয়ে না খাইয়ে মারতে পারি না। তাদের বেঁচে থাকার ব্যবস্থা নিতে হবে। জীবনযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে সেটা তো আমাদের করতে হবে। কিন্তু আতঙ্কটা এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যেটা সত্যি খুব দুঃখজনক। তবুও আমরা ঠিক করেছি। কোন কোন এলাকায় বেশি আক্রান্ত দেখা যাচ্ছে, সেই সব এলাকা লকডাউন করা হবে। যেন ওখান থেকে কোনো রকম সংক্রামিত না হয়। সাথে সাথে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডগুলি যেন সচল থাকে সেদিকেও ব্যবস্থা নিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমি পার্লামেন্টে আসব, আমাকে অনেক জায়গা থেকে নিষেধ করা হয়েছে। অনেকে বলেছেন আপনি যাবেন না, নেত্রী আপনি যাবেন না। আমি বললাম, গুলি, বোমা, গ্রেনেড কত কিছুই তো মোকাবিলা করে করে এই পর্যন্ত এসেছি। আর এই অদৃশ্য শক্তির ভয়ে ভীত হয়ে থাকব, আমাদের সংসদের মেম্বার শুধু পার্লামেন্ট মেম্বার না, আওয়ামী লীগ পরিবারের একজন সদস্যকে হারিয়েছি। আমার ক্যাবিনেটের প্রতিমন্ত্রীকে হারিয়েছি। সেখানে আমি তো বসে থাকতে পারি না।

করোনাভাইরাস নিয়ে বলেন, উন্নত দেশ, অনুন্নত দেশ বা উন্নয়নশীল দেশ অস্ত্রের দিক থেকে শক্তিশালী হোক আর অর্থের দিক থেকে শক্তিশালী অথবা দরিদ্র দেশ কোনো ভেদাভেদ নাই। সব জায়গায় এক হয়ে গেছে। ভয় এবং আতঙ্কে সব জয়গায় কিন্তু একই অবস্থা। করোনাভাইরাসটা ঠিক শুরু হয় তারপর একটা পর্যায়ে আক্রান্তের হার এবং মৃত্যুর হার বাড়তে বাড়তে এক জায়গায় গিয়ে থামে। উন্নত দেশ থেকে বিশেষ করে পশ্চিমা দেশ থেকে এখন দক্ষিণ এশিয়াতে ওয়েবটা (ঢেউ) চলছে।

মোহাাম্মদ নাসিম সম্পর্কে বলেন, এই করোনাভাইরাস এটাও এক ধরনের যুদ্ধ। এই সময় আমার দুইজনকে হারালাম যাদের প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে পেয়েছি। তাদের হারানো অত্যন্ত কষ্টকর।

তিনি বলেন, আমরা সব সময় অনেকগুলো দল নিযে যখন আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। শুধু ১৪ দল বলে নয় ১৯৮০ সালে যখন ঐক্য গড়ে তুলেছি। আমি সব সময় ঐক্যের দায়িত্বটা মোহাম্মদ নাসিমকে দিতাম। তার ভেতর একটা বিষয় ছিল, সবাইকে নিয়ে অন্যান্য দলের সাথে চমৎকার সম্পর্ক রেখে চলা এবং কাজ করার একটা শক্তি ছিল। সেজন্য আমি তাকে দায়িত্বটা দিতাম। রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করার আকাঙ্ক্ষা ছিল। সাংগঠনিকভাবে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করে গড়ে তোলার পেছনে যথেষ্ট সময় দিয়েছেন তিনি।

শেখ মো. আব্দুল্লাহ সম্পর্কে বলেন, আমি দেশে আসার পর আব্দুল্লাহ সাহেবকে পেয়েছি। আমার নির্বাচন পরিচালনা শুধু না, নির্বাচনের সম্পূর্ণ দেখাশোনা তিনি করতেন। গোপালগঞ্জের মানুষের জন্য কঠিন সময়ে হাল ধরেছেন শেখ আব্দুল্লাহ।

তিনি বলেন, কওমি মাদরাসাকে একত্রিত করে তাদের জন্য সনদ দেওয়া, নীতিমালা তৈরি করা। একটা আইন করা, আইনটাকে পাশ করা সব থেকে বেশি কাজ করেছে আমার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদিন আর আব্দুল্লাহ সাহেব। দুজনই খুব ঠান্ডা মাথার। এই দুজনকে মূল দায়িত্ব দিয়েছিলাম সবার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে কাজ করার। আজ সেই দুজনই নাই।

লাইট নিউজ

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD