করোনায় মৃতের সংখ্যা লুকানোর অভিযোগ উঠেছে ব্রাজিল সরকারের বিরুদ্ধে। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট থেকে করোনা মহামারি–সংক্রান্ত সব হিসাব-নিকাশ সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ওয়েবসাইট থেকে তথ্য সরিয়ে ফেলায় ব্যাপক সমালোচনার মুখে সরকার। গণমাধ্যমগুলোর অভিযোগ, মৃতের সংখ্যা লুকাতে সরকার এই কারসাজি করেছে।
অবশ্য গত শুক্রবার ওয়েবসাইটের তথ্য আচমকা সরিয়ে ফেলার পর সমালোচনা শুরু হলে পরদিন শনিবার আবার নতুন লেআউটের একটি পেজ ওয়েবসাইটে দেখা যায়। তবে সেখানে অল্প কিছু তথ্য ছিল। বিবিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর পর প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে এখন পরিণত হয়েছে ব্রাজিল। লাতিন আমেরিকার এই দেশটিতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। এর মধ্যে সরকারি হিসাব–নিকাশ সরিয়ে ফেলল সরকার।
দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন থেকে তারা কেবল গত ২৪ ঘণ্টায় কতজন আক্রান্ত ও কতজন মারা গেছেন, এই তথ্য দেবেন। অন্য দেশগুলোর মতো এখন আর মোট চিত্র দেওয়া হবে না।
ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারো টুইটে বলেন, ক্রমবর্ধমান ডেটা…দেশের বর্তমান অবস্থাকে বোঝাতে পারে না। আক্রান্ত, মৃতের সংখ্যা জানানোর অন্য ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বর্তমানে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যায় পৌঁছে গেছে ব্রাজিল। গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারের দেওয়া হিসাব আমলে নিলেও প্রতি মিনিটে দেশটিতে প্রায় একজনের মৃত্যু হচ্ছে। বর্তমানে দেশটিতে কোভিড–১৯–এ আক্রান্তের সংখ্যা ৬ লাখ ৪০ হাজার। তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি বলেই ধারণা করা হচ্ছে। কারণ, ব্রাজিলে প্রতিদিন যে পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করা হয়, তা যথেষ্ট। এখন পর্যন্ত ৩৫ হাজার মানুষ মারা গেছে বলে সরকারি পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে। এ তথ্যও লুকানোর অভিযোগ উঠেছে ব্রাজিলের সরকারের বিরুদ্ধে।
করোনা পরিস্থিতি জানানোর সময়ও পিছিয়ে দিয়েছে সরকার। আগে সন্ধ্যা পাঁচটার দিকে তাদের ওয়েবসাইটে সব তথ্য পাওয়া যেত। এখন সেটি রাত ১০টার দিকে প্রকাশ করা হবে।
এদিকে সরকারের এসব সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করছেন গণমাধ্যমকর্মী ও কংগ্রেসের সদস্যরা। টানা চার দিন ধরে ব্রাজিলের এক হাজারেরও বেশি মৃত্যুর খবর প্রকাশের পরে ডেটা অপসারণের ঘটনা নিন্দনীয় বলেই অভিমত দিচ্ছেন তাঁরা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক জরিপকারী প্রতিষ্ঠানের হিসাব অনুযায়ী, আক্রান্তে দ্বিতীয় স্থানে থাকা ব্রাজিলে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯০৪ জন এই রোগটিতে মারা গেছেন। নতুন আক্রান্ত ২৭ হাজার ৭৫ জন।