বৃহস্পতিবার, ০৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৬:৩৭ অপরাহ্ন

জাকারবার্গ এখন ভীষণ চাপে

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০

যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বিক্ষোভ নিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উসকানিমূলক মন্তব্যে ব্যবস্থা না নেওয়ায় তাঁদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করছেন ফেসবুক কর্মীরা। এর বদলে তাঁরা টুইটারের সাহসিকতা ও স্বচ্ছ অবস্থানের প্রশংসা করে নিয়োগকর্তাকে তিরস্কার করছেন।

ফেসবুক, গুগল, আমাজনে মতো অনেক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সাম্প্রতিককালে অনেক সামাজিক ন্যায়বিচােরের বিষয়ে সক্রিয়ভাবে নিজেদের অবস্থান নিতে দেখা যায়। অনেক প্রতিষ্ঠানকে তাঁদের নীতিমালা পরিবর্তন করে ব্যবস্থা নিতে বাধ্য করা হয়।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বর্তমান মার্কিন পরিস্থিতিতে ফেসবুকের শীর্ষ পর্যায়ের সাতজন কর্মীর মধ্যে তিনজন প্রকাশ্যে জাকারবার্গের সমালোচনা করেছেন।

ফেসবুকের নিউজ ফিডের পণ্য নকশা বিভাগের পরিচালক রায়ান ফ্রেইটিস বলেন, ‘মার্ক ভুল করেছেন। আমি তাঁর মন পরিবর্তনের জোর প্রচেষ্টা চালাব।’ তিনি ৫০ জনের বেশি সমমনা কর্মীকে এ কাজে পাশে পাচ্ছেন বলে জানান। তাঁরা অভ্যন্তরীণ নীতি পরিবর্তনের জন্য লবিং চালাবেন।

পণ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক জেসন টফ বলেন, ‘আমি ফেসবুকে কাজ করি। আমাদের যেভাবে তুলে ধরা হচ্ছে, এতে আমি গর্বিত নই। বেশির ভাগ সহকর্মী একই রকম অনুভূতির কথা বলেছেন। আমরা আমাদের কণ্ঠস্বর জোরালো করব।’

ফেসবুকের মুখপাত্র অ্যান্টি স্টোন বলেন, ‘আমাদের বেশির ভাগ লোক বিশেষত আমাদের কৃষ্ণাঙ্গ সম্প্রদায় যে বেদনা অনুভব করছে, তা আমরা স্বীকার করি। আমরা কর্মীদের নেতৃত্বের সঙ্গে একমত না হলে প্রকাশ্যে কথা বলতে উৎসাহিত করি।’

শুক্রবার টুইটারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের একট টুইটে সতর্কীকরণ লেবেল সেঁটে দেওয়া হয়। টুইটে ট্রাম্প বলেন, লুটতরাজ হলে গুলিও চলবে। টুইটার বলে, ট্রাম্পের ওই টুইট তাদের সহিংস নীতিমালা ভেঙেছে।

আমেরিকার মিনেপোলিসে জর্জ ফ্লয়েড (৪৬) নামের আফ্রিকান-আমেরিকান এক ব্যক্তিকে ২৫ মে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে নির্যাতন করেন শ্বেতাঙ্গ পুলিশ অফিসার ডেরেক চাওভিন। এতে সাবেক বাস্কেটবল খেলোয়াড় ফ্লয়েডের মৃত্যু হয়। জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে বিক্ষোভে উত্তাল পুরো আমেরিকা। বর্ণবাদবিরোধী ক্ষুব্ধ মানুষের উত্তাল আন্দোলন থামছে না। পরিস্থিতি সামাল দিতে আমেরিকার অন্তত ৪০টির বেশি নগরে কারফিউ জারি করতে হয়েছে। বিক্ষোভ দমনে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করা হয়েছে।

ফেসবুকের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের মন্তব্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। শুক্রবার এক পোস্টে মার্ক জাকারবার্গ বলেন, তিনি মনে করেন, মন্তব্যটি গভীরভাবে আপত্তিজনক হলেও তা সহিংসতার জন্য উসকানি দেওয়ার বিরুদ্ধে কোম্পানির নীতি লঙ্ঘন করেনি এবং জনগণকে জানতে হবে যে সরকারের বল প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করছে কি না।

এর আগে জাকারবার্গ টুইটার ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে যুদ্ধে ফেসবুককে না জড়ানোর কথা বলেছিলেন। জাকারবার্গ বলেন, শুক্রবার ফেসবুক হোয়াইট হাউসকে তাঁদের নীতিমালার কথা জানিয়েছে। পরে সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানায়, ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলেছেন জাকারবার্গ।

তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে ফেসবুকের অনেক কর্মী টুইটারের ভূমিকার প্রশংসা করছেন। ফেসবুকের পণ্য ব্যবস্থাপক ডেভিড গিলিস বলেন, ‘টুইটারের স্বচ্ছতার টিমের প্রতি সম্মান বিশেষ করে তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে তার জন্য।’

মিনেসোটা অঙ্গরাজ্যের ওই ঘটনার সামজিক ন্যায়বিচার দাবিতে জ্যাসন টফসহ কয়েকজন কর্মী তহবিল সংগ্রহ করতে শুরু করেছেন। সোমবার জাকারবার্গ এক পোস্টে বলেছেন, তাঁর প্রতিষ্ঠান সামাজিক ন্যয়বিচার খাতে অতিরিক্তি এক কোটি ডলার খরচ করবে।

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD