বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৯ অপরাহ্ন

বদলেছে প্রেক্ষাপট: চিকিৎসায় প্রস্তুত বেসরকারি হাসপাতালও

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ জুন, ২০২০

দেশজুড়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা।

অনেক রোগী বেসরকারি মেডিকেলে চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ করলেও বেসরকারি মেডিকেলগুলোর সংগঠন বলছে, করোনা পরিস্থিতিকে জীবনের অংশ মেনে সব ধরনের চিকিৎসা দিতে প্রস্তুত চিকিৎসকরা। সহসাই সমস্যা কেটে যাবে বলে মনে করছেন তারা।

রোগীদের অভিযোগ, অনেক মেডিকেলেই করোনা আক্রান্ত ছাড়াও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা পেতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক রোগীকে ফিরিয়ে দেয়ার অভিযোগও রয়েছে। আবার মেডিকেলে ভর্তি হতে পারলেও ডাক্তার-নার্সের সঙ্কটের কথা বলছেন কেউ কেউ। এমন পরিস্থিতিতে বেসরকারি মেডিকেলে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা।

তবে বেসরকারি মেডিকেলগুলো বলছে, করোনার এই সঙ্কটেও ডাক্তার-নার্সরা ফ্রন্টলাইনে থেকে দায়িত্ব পালন করছেন। সবক্ষেত্রেই চিকিৎসক এবং মেডিকেলে ওপর দায় চাপালে সেটি মেনে নেয়া সম্ভব নয়। তবে সমস্যা কিছুটা থাকলেও সেগুলো দ্রুতই কাটিয়ে উঠতে চান তারা। ইতোমধ্যে সেটি নিয়ে উদ্যোগী হয়েছেন বলে দাবি তাদের।

একটি বেসরকারি মেডিকেলে সাধারণ অসুস্থতার জন্য ভাইকে নিয়ে গেলেও তাদের ফিরিয়ে দেয়ার অভিযোগ করেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শহিদুল ইসলাম।

তিনি জানান, গত শনিবার ভাইয়ের তলপেটে ব্যথা উঠলে তাকে নিয়ে একটি বেসরকারি মেডিকেলে যাওয়ার পর তাদের বাইরে থেকেই বিদায় করে দেওয়া হয়েছে। ভাইয়ের সর্দি থাকার কারণেই তাদের ফেরত পাঠানো হয়। পরে অনলাইনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েছেন বলে জানান তিনি। এছাড়াও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমেই চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন অনেকে।

রোগীদের এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. হাবিবুর রহমান খান বলেন, দেশে এতে সংখ্যক মেডিকেল, তাদের চিকিৎসায় কোন অভিযোগের ক্ষেত্রে কঠিন মনিটরিং দরকার। প্রতিনিয়ত এত সংখ্যক বেসরকারি মেডিকেল মনিটরিং করা সম্ভব নয়। তবে হুট করেই কাউকে অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় না। কেউ যদি অফিসিয়ালি আমাদের কাছে কমপ্লেইন করে সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেয়া যায়। করোনা চিকিৎসাসহ সবক্ষেত্রে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো হুট করেই সমাধান করা সম্ভব নয়, এক্ষেত্রে চাইলেই বেসরকারি মেডিকেলের ওপর অনেক কিছু চাপিয়ে দেয়া সম্ভব নয়। তারা আমাদের কাছে আরেকটু সময় চেয়েছে। যতটুকু সম্ভব তারা সমস্যার সমাধান করছেন।

কয়েকটি বেসকারি মেডিকেলের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে, ডাক্তার-নার্সরা শিফট ভিত্তিক দায়িত্ব পালন করছেন। সে ক্ষেত্রে টানা কয়েকদিন ডিউটি করার পর তাদের কোয়ারেন্টাইনে হোটেলে রাখাসহ সব সুবিধা নিশ্চিত করা হচ্ছে। ফলে যেখানে আগে একজন ডাক্তার প্রয়োজন হতো, সেখানে এখন তিনজন লাগছে। আর অনেক রোগী সাধারন ঠান্ডা, জ্বরসহ কিছু সমস্যা নিয়ে মেডিকেলে আসছেন। সে ক্ষেত্রে তাদের বাসায় চিকিৎসা নেয়ার জন্য বলা হচ্ছে। জটিল কোন সমস্যা না থাকলে রোগীদের হাসপাতালে না আসার অনুরোধ জানানো হচ্ছে বলেও জানান তারা।

রোগীদের চিকিৎসা না পাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এম এ মুবিন খান বলেন, ডাক্তার-নার্সরা প্রতিনিয়ত ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, তারা ফ্রন্টলাইন ফাইটার। তারা সব সময়ই চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন। তবে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কেন্দ্রে করে গোটা চিকিৎসক সমাজকে দোষী করা সঠিক নয়। চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে সমস্যাগুলোর কথা উঠে এসেছে সেগুলো দিন দিন সমাধান হচ্ছে। করোনাকে এখন জীবনের অংশ হিসাবে নিয়েই সবাইকে কাজ করতে হবে। অধিকাংশ ডাক্তারই কিন্তু এখন সেভাবে সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি বলেন, সার্বিক চিত্র আগের মতো নেই। যতো দিন যাচ্ছে ততো সমস্যা সমাধান হচ্ছে। সরকার সব মেডিকেলে কোভিড ও নন কোভিড রোগীদের চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু বিদেশের মতো আমাদের হাসপাতালগুলোতে ইনফেকশন কন্ট্রোলের ব্যবস্থা সেভাবে নেই। সুতরাং কোভিড এবং নন কোভিড চিকিৎসায় কিছুটা সমস্যা দেখা দেবে। যদি কোন মেডিকেলে হার্ট, কিডনিসহ জটিল কোন রোগী থাকে সেখানে করোনা ছড়িয়ে পড়লে কিন্তু ভয়াবহ অবস্থায় পড়তে হবে। তবে চিকিৎসা না দেয়ার যে অভিযোগ, হয়ত চার-পাঁচটি মেডিকেল এমনটি করছেন। তাদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন? তাদের বিষয়ে তো আমরা বাধা দিচ্ছি না।

বাংলাদেশ প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. এবিএম হারুন বলেন, আমরা সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। আর করোনা চিকিৎসার ক্ষেত্রে যে ১০ হাজার সিট দিতে চাই, সেটি নিয়ে সরকারের সঙ্গে আরো আলোচনা করতে হবে। চিকিৎসকদের হোটেলসহ আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো নিশ্চিত করতে পারলেই এটি করা সম্ভব।

লাইটনিউজ/এসআই

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD