চলমান করোনা সংকটে ডিজিটাল মাধ্যমে বিচার কার্যক্রম চালিয়ে নিতে আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার বিল-২০২০ সংসদে উপস্থাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৩ জুন) দুপুরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশনে বিলটি উত্থাপন করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে- মামলার বিচার বিচারিক অনুসন্ধান, দরখাস্ত, আপীল শুনানি, সাক্ষ্য গ্রহণ, যুক্তিতর্ক গ্রহণ, আদেশ বা রায় প্রদানকালে পক্ষগণের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার উদ্দেশে এই বিল আনা হয়েছে।
ভার্চুয়াল উপস্থিতির বিষয়ে বলা হয়েছে-অডিও ভিডিও বা অনুরূপ কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতির মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির আদালতে বিচার বিভাগীয় কার্যধারা উপস্থিত থাকা বা অংশ গ্রহণ।
আইনের ৩ ধারায় বলা হয়েছে ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাই থাকুক না কেনো, যেকোনো আদালত এই আইনের ধারা ৫ এর অধীনে জারিকৃত প্রাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) সাপেক্ষে, অডিও ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থীগণ বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীগণের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিতকরণে যেকোনো মামলার বিচার বিচারিক অনুসন্ধান বা দরখাস্ত বা রায় প্রদান করা যাবে।
বিলের উদ্দেশে ও কারণ সম্বলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে- বিদ্যমান আইনের বিধান অনুযায়ী আদালতে মামলার পক্ষগণ বা তাদের নিযুক্ত বিজ্ঞ আইনজীবীগণের এবং সাক্ষীগণের সশরীরে উপস্থিতির মাধ্যমে মামলার বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। সমগ্র বিশ্বের মত বাংলাদেশেও কোভিড-১৯ মহামারী রোধকল্পে মাসাধিককাল ধরে কতিপয় ব্যতিক্রম ব্যতীত দেশের সকল আদালত ও সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহে সাধারণ ছুটি ঘোষণাসহ জনসমাগম হয় এরূপ কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
বিলে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে আদালতসহ সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ খুলে দেয়া হলেও কোভিড-১৯ মহামারী রোধকল্পে অধিকতর জনসমাগমকে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশের সকল আদালতে বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার সুবিধার্থে ভিডিও কনফারেন্সিংসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী সকল পক্ষ বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীগণের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিতক্রমে মামলার বিচার বিচারিক অনুসন্ধান দরখাস্ত বা আপিল শুনানি বা সাক্ষ্য গ্রহণ বা যুক্তিতর্ক গ্রহণ বা আদেশ বা রায় প্রদানের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। এর ফলে বিদ্যমান সংকটে ভিডিও কনফারেন্সিংসহ অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী সকল পক্ষ বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা সাক্ষীগণের ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করে বিচার কার্য পরিচালনা করা যাবে।
প্রসঙ্গত করোনা পরিস্থিতিতে জনগণের বিচারপ্রাপ্তির সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংবিধানের ৯৩ অনুচ্ছেদের (১) দফার আওতায় রাষ্ট্রপতি গত ৯ মে আদালত কর্তৃক তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ জারি করেন। এরপর নিয়ম অনুযায়ী গত ১০ জুন বিলটি সংসদে উত্থাপন করেন।
লাইট নিউজ