স্পোর্টস ডেস্ক : উপস্থিত সাংবাদিকদের সামনে ক্রিস গ্রিভসকে নিয়ে যখন স্কটল্যান্ড অধিনায়ক কাইল কোয়েটজার কথা বলছিলেন, তখন তার কণ্ঠে ছিল উচ্ছ্বাস, চেহারায় খুশির আভা। হবেই না-বা কেন? সেই গ্রিভসই মরুর বুকে বাঘের গর্জন থামিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে স্বপ্নের মতো শুরু এনে দিয়েছেন স্কটল্যান্ডকে।
তাই অধিনায়কের কণ্ঠে সতীর্থকে নিয়ে বাড়তি উচ্ছ্বাস থাকবে তা অনুমিতই। কিন্তু রোববার রাতে কোয়েটজার গ্রিভসকে নিয়ে যা বললেন তাতে চমকে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায়। স্কটিশ অধিনায়ক জানান, অ্যামাজনের ডেলিভারি ম্যান হিসেবে কাজ করতেন গ্রিভস। এছাড়াও স্কটল্যান্ড দলের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড়ও নন তিনি।
মাসকটের আল আমিরাত স্টেডিয়ামে ব্যাট ও বল হাতে বাংলাদেশকে ভুগিয়েছেন গ্রিভস। যখন ৫৩ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে দল ধুঁকছে তখন ব্যাট হাতে আলোর দিশারী হয়ে পথ দেখিয়েছেন, এনে দিয়েছেন লড়াকু স্কোর। ৪টি চার ও ২টি ছয়ের মারে ২৮ বলে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন গ্রিভস। আবার বল হাতে এই লেগ স্পিনার দুই সেট ব্যাটসম্যান সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের উইকেট নিয়ে লেখেন জয়ের মহাকাব্য।
কোয়েটজার কথা বলতে গিয়ে জানালেন গ্রিভসের সংগ্রাম ও ত্যাগের কথা, ‘গ্রিভসকে নিয়ে আমি সত্যিই গর্বিত। সে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। খুব বেশিদিন আগের কথা নয় সে অ্যামাজনের পার্সেল বিতরণ করতো। এখন সে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় হয়েছে।’
টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে স্কটল্যান্ড ১৪০ রান করে ৯ উইকেট হারিয়ে। জবাবে খেলতে নেমে বাংলাদেশ থামে ১৩৪ রানে। অথচ ৬ রানে জিতে বিশ্বকাপ শুরু করা দলটির নায়ক গ্রিভস চুক্তিবদ্ধ কোনো ক্রিকেটার নন। এটাও জানিয়েছেন কোয়েটজার।
তিনি বলেন, ‘গ্রিভস স্কটল্যান্ডের চুক্তিবদ্ধ খেলোয়াড় নন। সে পরিকল্পনায় ছিলো। সে পরিশ্রম করেছে এবং নিজেকে বিবেচনার জন্য রেখেছিলো। মাসখানেক আগে পেছনে ফিরে গেলে সে একটি ম্যাচও খেলেনি। কিন্তু দেখুন সে কি করেছে। এটা প্রমাণিত যে সহযোগী দেশগুলোর ক্রিকেটেও মানসম্পন্ন খেলোয়াড় আছে। এখন শুধু এটা দেখানোর জন্য তাদের প্ল্যাটফর্ম দরকার।’
গ্রিভসের ব্যাটিং-বোলিং দেখে বোঝার উপায় ছিল না এটি তার দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এছাড়া লিস্ট-এ ও স্বীকৃত টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছন ২টি ও ৫টি। সেই অনভিজ্ঞ গ্রিভসই বাংলাদেশকে ডুবিয়ে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছে। স্কটিশদের নায়কও নির্বাচিত হয়েছেন তিনি।