দেশের সকল কারখানায় একটি করে করোনাভাইরাস শনাক্তে ল্যাব স্থাপনের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান।
বৃহস্পতিবার (৪ জুন) বিজিএমই-এর কোভিড-১৯ শনাক্তকরণ ল্যাবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমি খবর নিয়ে জানতে পেরেছি, অনেক কারখানায় শ্রমিকদের জন্য ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিন স্থাপন করা হয়েছে। অনেক কারখানায় করোনা আইসোলেশন সেন্টারও স্থাপন করা হয়েছে। ফলে প্রতিদিনই করোনা থেকে সুস্থ হয়ে কাজে ফিরছেন অনেকে। সরকারের পক্ষ থেকে সুস্থ হওয়ার যে তথ্য দেওয়া হচ্ছে, প্রকৃতপক্ষে তার চেয়ে বেশি সুস্থ হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সালমান এফ রহমান বলেন, বিশেষ করে পুলিশ বিভাগের রিপোর্ট অনুসারে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যদের ৮৫ শতাংশ সুস্থ হয়ে গেছে। তারা কাজেও যোগদান করেছেন। তাই বিজিএমইএসহ সব কারখানায় যেন পর্যায়ক্রমে আইসোলেশন সেন্টার স্থাপন করে।
এর আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, এই ল্যাব চালুর মাধ্যমে বিজিএমইএ আবারও প্রমাণ করল যে, বিজিএমইএ- এর সদস্যরা শুধু ব্যবসা করে না। মানবিকভাবে শ্রমিকদের পাশেও দাঁড়ায়।
তিনি বলেন, জীবন-জীবিকা নির্বাহের মাধ্যমে শ্রমিক ও মালিকরা মিলে এই খাতের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখছে। করোনা এখনি চলে যাচ্ছে না। এই করোনাকে ম্যানেজ করে আমাদের চলতে হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যতদিন পর্যন্ত ওষুধ আবিষ্কার না হবে ততদিন পর্যন্ত করোনাকে আমাদের ম্যানেজ করে চলতে হবে।
মেয়র আতিক বলেন, করোনা পরীক্ষার কোনো ফলস (ভূয়া) রিপোর্ট তৈরি করা হবে না বলে প্রত্যাশা করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিজিএমইএ’র সভাপতি ড. রুবানা হক। এসময় ভিডিও কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান, ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ (বাডাস)-এর সভাপতি প্রফেসর ডা. এ. কে. আজাদ খান, বস্ত্রকল-মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএমএ) -এর সাবেক সভাপতি মতিন চৌধুরী, এফবিসিসিআই-এর সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইএ-এর সাবেক সভাপতি ও সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
পোশাক শ্রমিকদের করোনাভাইরাস শনাক্তে ল্যাব তৈরি করেছে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ)। বিজিএমইএর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, গার্মেন্টস সেক্টরে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্ব মালিকপক্ষের পাশাপাশি তাদেরও রয়েছে।
ঢাকা ও চট্টগ্রামে চারটি ল্যাব বসাচ্ছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ। এছাড়া নারী শ্রমিকদের জন্য আলাদা আইসোলেশন সেন্টারও করবে তারা। শ্রমঘন শিল্প হওয়ায় সংক্রমণের ঝুঁকিতে পোশাক শ্রমিকরা। এরই মধ্যে সাভার, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জে কিছু শ্রমিকের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ঝুঁকি কমাতে যত বেশি সম্ভব শ্রমিককে পরীক্ষার আওতায় আনতে চায় বিজিএমইএ।