মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০:২৪ অপরাহ্ন

মসলার যত ভেষজ গুণ

লাইটনিউজ রিপোর্ট:
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ৮ নভেম্বর, ২০২১

লাইট নিউজ ডেস্ক : মসলা খাবার সুস্বাদু করে। এর ভেষজ গুণেরও কমতি নেই। বায়োকেয়ার বাংলাদেশের সিইও এবং আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক শরিফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন মোনালিসা মেহরিন।
গ্যাস্ট্রিক, বুকজ্বালা, ঢেকুর ওঠা ইত্যাদি সমস্যার জন্য অনেকেই খাবারের মসলাকে দায়ী করেন। তাদের ধারণা, মসলা খাওয়া ভালো নয়। খাবারে যত কম মসলা দেওয়া যায়, ততই ভালো। আসলে বিষয়টি পরিমিতিবোধের। বেশি বেশি কোন কিছুই ভালো নয়। কিন্তু পরিমানমতো মসলা যেমন খাবারের স্বাদ বাড়ায়, তেমনি সেসবের আছে কিছু ভেষজ গুণও।

দারুচিনি

মাংস রান্নায় বহুল ব্যবহূত মসলা দারচিনি। এর বাইরে আরো নানা খাবারে স্বাদ ও গন্ধ যোগ করে দারচিনি। এটি রক্তে শর্করার মাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। নিয়মিত সামান্য দারচিনি মুখে নিয়ে চিবালে মুখের গন্ধ দূর হয়। স্বাদগ্রন্থী শক্তিশালী করে।

হলুদ

তরকারিসহ নানা পদ রান্নায় ব্যবহূত হয় হলুদ। এটি খাবারে রং যোগ করে। হলুদের আছে ভেষজ গুণও। পেটের নানা পীড়া থেকে মুক্তি দেয় কাঁচা হলুদ। এতে থাকা কারমিউকিনের রয়েছে প্রদাহরোধী গুণ, যা হূদরোগেরও ঝুঁকি কমায়। হলুদ আমাদের রক্ত পরিষ্কার করে। এর রয়েছে জ্বর ও কৃমিনাশক গুণ। এ ছাড়া বাত, জন্ডিস ও ঠাণ্ডায় উপকার পাওয়া যায় হলুদে। এর রস চর্মরোগের জীবাণু নাশ করে। হলুদে পর্যাপ্ত আয়রন আছে বলে এটি রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। তা ছাড়া এটি অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ব্যাকটেরিয়ারোধী। পাকস্থলীর প্রদাহ কমায়, কফ-ঠাণ্ডায় উপকারী। ক্ষতস্থানে হলুদ লাগালে তা শুকাতে সাহায্য করে। ত্বকের রং উজ্জ্বল করে। প্রস্রাবের জ্বালা কমাতে হলুদের সঙ্গে মধুর মিশ্রণ উপকারী।

এলাচ

এলাচকে বলা হয় মসলার রানি। কারণ যেকোনো খাবারে বাড়তি স্বাদ আর সুগন্ধ এনে দিতে এলাচের জুড়ি মেলা ভার। এর ভেষজ গুণও কম নয়। সকালে খালি পেটে এলাচ মেশানো পানি পান করলে হজমের সমস্যা দূর হয়। প্রতিদিন একচিমটি এলাচ গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে রক্তস্বল্পতা দূর করে। শরীরের শক্তিবর্ধন করে। যাঁদের মুখে অতিরিক্ত গন্ধ তাঁরা এলাচ চিবাতে পারেন। এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান গন্ধ দূর করতে সাহায্য করে। অনেক সময় হঠাত্ করেই আমাদের হেঁচকি শুরু হয়। থামার কোনো লক্ষণ না দেখলে এলাচ মুখে দিন। হেঁচকির মাত্রা কমে আসবে।

গোলমরিচ

শুধু ঝাল বাড়ানোই নয়, ভেষজ গুণেও সমৃদ্ধ গোলমরিচ। আয়ুর্বেদ মতে, ক্ষুধা বৃদ্ধি ও রুচি বাড়াতে কাজে দেয় গোলমরিচ। যাঁরা কফ ও কৃমির সমস্যায় ভুগছেন, তাঁরাও নিয়মিত তরকারিতে গোলমরিচ ব্যবহার করতে পারেন। স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি, পেশির সুগঠন, ফোলা ভাব দূর করা, বুক ও দাঁতের ব্যথা কমাতেও কাজ করে গোলমরিচের ঔষধি গুণ।

আদা

কাশি ও বমিভাব কমাতে এবং বদহজমে আদা ব্যবহূত হয়। আদার রস মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেলে কাশি কমে। মাইগ্রেনের ব্যথা কমাতেও আদা উপকারী। মোশন সিকনেস কমাতে এটি ব্যবহূত হয়।

লবঙ্গ

লবঙ্গে ব্যথা উপশমকারী উপাদান আছে। দাঁতের নানা সমস্যার সমাধানে ব্যবহূত হয় লবঙ্গ। এটি মুখের দুর্গন্ধ দূর করে। দন্তচিকিত্সকরা প্রায়ই রোগীদের ওষুধের পাশাপাশি লবঙ্গ চা বা আস্ত লবঙ্গ খাওয়ার পরামর্শ দেন। হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় উপকার দেয় লবঙ্গ। আলসার নিরাময়েও কাজ করে লবঙ্গ। লবঙ্গের উপকারিতা ভালোভাবে পেতে প্রতিদিন এক কাপ লবঙ্গের চা খেতে পারেন। সর্দি-কাশিতেও এটি বেশ উপকারী।

তেজপাতা

তেজপাতায় থাকা প্রদাহরোধী উপাদান আর্থ্রাইটিসের ব্যথা কমাতে উপকারী। ঠাণ্ডা লাগা বা ফ্লুজনিত সমস্যা প্রতিরোধ করে থাকে তেজপাতার গুণাগুণ। এটি বুকে জমা কফ বের করতে সাহায্য করে।

তেজপাতার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে। হজম প্রক্রিয়াকে বৃদ্ধি করে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানে উপকারী।

ইউরিক এসিডের মাত্রা কমাতে প্রতিদিন দুবার তেজপাতার চা পান করতে পারেন।

আরো সংবাদ
© All rights reserved © 2020 Lightnewsbd

Developer Design Host BD