গাজীপুর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল আলম রবিন। করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে।
রবিন বলেন, ‘সোমবার দুপুরের ফেসবুক মেসেঞ্জারে একটি মেসেজ আসে। ভাই আমার প্রতিষ্ঠানে একটি চাকরি হবে। করোনাকালে আমার কারখানার চাকরিটি চলে গেছে। প্লিজ ভাই একটা চাকরি দরকার। বিনয়ের সঙ্গে রবিনের উত্তর-আমার ছোট প্রতিষ্টানে ব্যবসা মন্দার কারণে উল্টো কয়েকজনকে ছাটাই করা দরকার। এরপরই আরেকটি মেসেজ আসে। ছয় মাস বয়েসি ফুটফুটে এক কন্যা শিশুর। কণ্ঠে আকুতি, হাতে টাকা নেই- তিন মাস খুবই কষ্টে চলেছি, আগামীকাল আমার ছোট্ট মেয়ের মুখে খাবার দিতে পারবো না, সেটা নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি।’
ফুটফুটে এমন শিশু না খেয়ে থাকবে! বুকের ভেতর অজানা কষ্টে হাহাকার করে উঠে রবিনের। রবিনের নিজেরও দেড় বছর বয়সী একটি সন্তান আছে। নিজের সন্তানের কথা মনে পড়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে একটি নগদ অ্যাকাউন্ট নাম্বার চান ওই বাবার কাছে। আধঘণ্টার মধেই শিশুটির দুধের এবং পরিবারটির জন্য টাকাও পাঠিয়ে দেয় ছাত্রলীগ নেতা। আর ফেসবুকে ঘোষণা দেন গাজীপুর জেলায় কোনও বাবা-মায়ের শিশুর দুধ এবং ওষুধের প্রয়োজন হলে যেন তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়।
ছাত্রলীগ নেতা জাহিদুল আলম রবিন বলেন, করোনার কারণে জেলার অনেক মানুষ কর্মহীন হয়ে অনেক কষ্টে দিন অতিক্রম করেছেন। এমনই একজন বাবা গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে আমার ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করে এবং তাঁর শিশুটির খাবারের কষ্টের কথা জানায়। আমি সঙ্গে সঙ্গে পাশে দাড়াই। শুধু তাই নয়- শ্রীপুর উপজেলায় কোন শিশুর দুধের প্রয়োজন হলে কিংবা ওষুধের প্রয়োজন হলে আমি ব্যবস্থা করবো।
রবিন বলেন, একটা উপলব্ধিও হলো- করোনার এই সময়ে অনেক কলকারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। বেকার হয়ে গেছে অনেক মানুষ। ব্যবসা বানিজ্যের অবস্থাও অনেকের মন্দ। হয়তো অনেকেই এই বাবার মতো অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছেন। শুধু চক্ষুলজ্জা ও সামাজিক অবস্থানের ভয়ে কাউকে কিচ্ছু বলতে পারেন না। আমি এই মানুষগুলোর জন্যেও কিছু করতে চাই।
শ্রীপুর পৌরসভার মধ্যে কারও যদি বাচ্চার দুধ অথবা জরুরি কোনো ওষুধের প্রয়োজন হয় দয়া করে আমাকে জানাবেন। টাকার অভাবে আপনার সন্তান না খেয়ে থাকবেনা ইনশাল্লাহ। ঔষধের ব্যবস্থাও হবে। শুধু বাচ্চাটাকে কষ্ট দেবেন না। যাদের সাহায্য করা হবে তাদের কারো নাম ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না।
আজ আওয়ামী লীগের ৭১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, সেই আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন ছাত্রলীগের এক নেতার অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর উদ্যোগ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা।
লাইট নিউজ